বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কোচের সংবাদ সম্মেলনে
ম্যাচ শুরুর আগের দিনের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন। বিশ্বকাপের প্রধান মিডিয়া সেন্টারে নির্ধারিত সময়ে শুরু হয় বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের সংবাদ সম্মেলন। কথা বলেন অধিনায়ক ও কোচ। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কোচ দেশমের মিনিট পনেরোর সংবাদ সম্মেলন হয় বেশ উপভোগ্য।
সম্মেলন শেষে দেখা গেল অন্য এক দেশমকে। বিভিন্ন দেশ থেকে বিশ্বকাপ কাভার করতে আসা সাংবাদিকদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে সময় দিলেন কয়েক মিনিট। ১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য গত বিশ্বকাপে কোচ হিসেবে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম বিশেষ ব্যক্তিত্বকে পেয়ে ফ্রেমবন্দী হয়েছেন অনেক সাংবাদিকই। কিছুক্ষণ আগে ফ্রান্সের অধিনায়ক সম্মেলন শেষ করে হেঁটে গেলেন নির্বিঘ্নেই। সেখানে দেশমের সম্মেলন কক্ষ ছাড়তে লেগেছে প্রায় দ্বিগুণ সময়।
ফ্রান্সের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হচ্ছে আগামীকাল। বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণার পর থেকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের চলছে ইনজুরির মিছিল। পগবা ছিটকে পড়েছেন আগেই, এবার বিদায় নিয়েছেন ব্যালন ডি অর জয়ী করিম বেনজামা।
বড় বড় তারকা না থাকলেও নিজের দলের শক্তিকে কম মনে করছেন না কোচ দেশম, ‘বেনজেমা না থাকলেও আমাদের অন্য খেলোয়াড় রয়েছে। পেনাল্টিতে সমস্যা হবে না, অন্যরাও ভালো পেনাল্টি টেকার।’
রাশিয়া বিশ্বকাপে দেশমের অন্যতম ট্রাম্পকার্ড ছিলেন কিলিয়ান এমবাপে। চার বছর আগে ১৯ বছরের এমবাপে এখন আরো পরিপক্ব বলে মনে করেন কোচ, ‘এমবাপে এখন আগের চেয়ে বেশি দায়িত্ব নিয়ে খেলবে। অবশ্যই সে আগের তুলনায় অনেক অভিজ্ঞ।’
১৯৯৮ সালে ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরের আসরে গ্রুপ পর্বেই বাদ পড়েছে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা গ্রুপ পর্বে বাদ পড়া একটা অলিখিত রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে গত দুই বিশ্বকাপেও। সেই অলিখিত ধারা নিয়ে চিন্তিত নন কোচ দেশম, ‘এবারের বিশ্বকাপটা ভিন্ন একটা টুর্নামেন্ট। ২০১৮ সালের মতো নয়। কারণ, দলে অনেক পরিবর্তন আছে। তবে আমাদের খেলার ধরনে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। ফুটবল দর্শনটা থাকছে আগের মতোই।’
এই বিশ্বকাপের অন্যতম অভিজ্ঞ ফুটবলারদের মধ্যে ফ্রান্সের অধিনায়ক হুগো লরিস। চারটি বিশ্বকাপ খেলা এই ফুটবলার নিজের সম্পর্কে বলেন, ‘আমি চারটি বিশ্বকাপে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গৌরব বোধ করছি। তবে আমার মধ্যে এটা নিয়ে বাড়তি কোনো চাপ নেই। অবশ্য বিশ্বকাপের মতো আসরে সব দলের মধ্যেই উত্তেজনা কাজ করে। এটা আমাদের মধ্যেও আছে।‘
ফ্রান্সের বিশ্বকাপ গ্রুপ নিয়ে অধিনায়কের পর্যবেক্ষণ, ‘আমি আগেও বলেছি, আমরা কেবল নিজেদের খেলার দিকেই মনোযোগী হচ্ছি। আমাদের সব প্রতিপক্ষের জন্যই রয়েছে সমান শ্রদ্ধা। আমরা কেবল সামনের ম্যাচটা নিয়েই ভাবছি। এই ম্যাচের পর অন্য কিছু ভাবব। আমরা ২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। তখনও আমরা চাপমুক্ত থেকে খেলেছিলাম। ম্যাচে খেলাটা উপভোগ করেছিলাম।’
লরিসের পরই সম্মেলনে প্রবেশ করেন দেশম। কখনো গুরু গম্ভীর ভাষায় বিশ্বকাপের বিশ্লেষণ আবার কখনো মজার ছলে কথা বলে পুরো সম্মেলন কক্ষে হাসির রোল ফেলেছেন দেশম। সম্মেলনের শেষে মিডিয়া অফিসার অনুশীলনের বিষয় সাংবাদিকদের অবগত করছিলেন। সাধারণত গণমাধ্যম প্রথম পনের মিনিট অনুশীলন দেখার সুযোগ পায়। মিডিয়া অফিসার সেটি বলতে ভুলে গেলেও দেশম, ‘ফার্স্ট ফিফটিন মিনিট অনলি’ -বলার পরেই সবাই হেসে ওঠেন।
এজেড/এটি/জেএস