৮৯ কেজি থেকে ৪ মাসে যেভাবে ২৬ কেজি কমালেন সানিয়া মির্জা
শোয়েব মালিকের সঙ্গে বিচ্ছেদের গুঞ্জনের মধ্যেই ৩৬ বছরে পা দিয়েছেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা। দাম্পত্য জীবন টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে গেলেও স্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে কার্পণ্য করেননি শোয়েব।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) মধ্যরাতে টুইট করে সানিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। এই পাকিস্তানি ক্রিকেটার লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন সানিয়া। তোমার জীবনে সুখ উপচে পড়ুক। তুমি সুস্থ থাকো, এই কামনা করি। জন্মদিনটা দারুণ ভাবে উপভোগ করো।’
সানিয়ার প্রতি শোয়েবের এই আবেগঘন শুভেচ্ছা বার্তা বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জনকে আরও কিছুটা উস্কে দিয়েছে। বিচ্ছেদ নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেননি দুজনের কেউই। পাকিস্তানের এক টেলিভিশন চ্যানেল জানিয়েছে, সানিয়া ও শোয়েব টেলিভিশনের কিছু অনুষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এই সময়ে বিবাহবিচ্ছেদ ঘোষণা করলে আইনি কিছু সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে। মূলত সে কারণেই দুজনে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
আরও পড়ুন : দুই পাকিস্তানি সুন্দরীর প্রেমে মজেছেন শোয়েব!
সানিয়া ও শোয়েবের দাম্পত্য সম্পর্কের বয়স ১২ বছর। এক যুগ এক ছাদের নিচে কাটিয়ে হঠাৎ ভাঙনের কথা শোনা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজের মনকে দুর্বল হতে দেননি এক সন্তানের জননী সানিয়া। চার বছরের ছেলে ইজহানকে নিয়ে কঠিন সময় পার করছেন তিনি। টেনিস কোর্টে হোক কিংবা ব্যক্তিগত জীবনে—সানিয়া সব সময়েই তার দৃঢ় মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
সানিয়ার ফিটনেস অনেকের অনুপ্রেরণা। ২০১৮ সালে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। মা হওয়ার পর তার ওজন বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৮৯ কেজিতে। এরপর কঠোর পরিশ্রমের পর ৪ মাসে ২৬ কেজি কমিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। ওজন কমানোর সেই যাত্রাপথ মোটেই সহজ ছিল না। অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন : বেইজিংয়ে ১৩ বছর আগে কী ঘটেছিল, মুখ খুললেন সানিয়া
শেষবার গ্র্যান্ডস্ল্যাম ফরাসি ওপেন খেলেছিলেন সানিয়া। ইউএস ওপেন খেলার পরেই টেনিস থেকে অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু চোটের কারণে খেলতে পারেননি ছয়টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ী সানিয়া। ফলে এখনই অবসর নেবেন কি না তা স্পষ্ট করে কিছু জানাননি তিনি। খেলোয়াড় মাত্রই ফিট হবেন, সকলে তা ধরেই নেন। কিন্তু এর নেপথ্যের পরিশ্রম অনেক সময়ে আড়ালেই থেকে যায়। নিজেকে ফিট রাখতে ঠিক কী নিয়ম মেনে চলেন সানিয়া?
সামনে কোনো খেলা আছে কি না, তার উপর নির্ভর করে সানিয়ার ডায়েট রুটিন। ম্যাচ থাকলে নিজেকে চাঙ্গা রাখতে কার্বোহাইড্রেট-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান তিনি। অন্য সময়ে প্রোটিন ও ভিটামিন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার দিকে বেশি করে জোর দেন। হায়দরাবাদের এই কন্যার পছন্দের খাবারের তালিকায় রয়েছে বিরিয়ানি। তবে সানিয়ার প্রতিদিনের মেনুতে সেসব খাবার একেবারেই থাকে না। সাধারণত ডাল ও রুটির মতো খাবার খান। এমনিতে খাদ্যরসিক সানিয়া। প্রিয় খাবারগুলো খাওয়া থেকে নিজেকে তিনি আটকান না। তবে পছন্দের খাবারগুলো বাড়িতেই তৈরি করে নেন। বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার এ়ড়িয়ে চলেন। আর কোনো দিন যদি বাইরের তৈলাক্ত খাবার খেয়েও ফেলেন, সেক্ষেত্রে পরের দিন শরীরচর্চার সময় অনেক বাড়িয়ে দেন।
খাওয়াদাওয়ায় নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি শরীরচর্চাতেও সমান মনোযোগ তার। খেলা না থাকলে রোজ ৫-৬ ঘণ্টা শারীরিক কসরত করেন। সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে দৌড়তে যান। শরীরচর্চা করেন। তার পর সকালের খাবার খেয়ে ৮টায় টেনিস কোর্টে যান। সেখানে প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা টেনিসের অনুশীলন করেন। তারপর বাড়ি ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ফের বিকেলে টেনিস কোর্টে হাজির হন। সন্ধ্যায় ফিরে জিমে যান কিংবা বাড়িতেই শরীরচর্চা করেন। ট্রেডমিলে হাঁটা, ওজন তোলা ও রোপ ট্রেনিং—সবই থাকে সেই তালিকায়।
কেএ