ভারত ম্যাচের হতাশা ভুলে পাকিস্তানের জন্য তৈরি বাংলাদেশ
তিনি একজন ভারতীয়। নিজের পরিচয়টা তো আড়াল করার সুযোগ নেই। তবে পেশাদারি দুনিয়ায় দেশ নিয়ে এখন আবেগের স্রোতে ভেসে যাওয়ারও সুযোগ নেই তার। এখন তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট। সেই শ্রীধরন শ্রীরামেরও ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটা নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে হচ্ছে! তবে তিনি অতীত নিয়ে আলোচনা করলেও বাস্তবতা থেকে দূরে সরে যান নি। ৫ রানে হারা সেই ম্যাচ নিয়ে আক্ষেপ নেই শ্রীরামের।
যদিও ম্যাচটা জেতা যেত। কিন্তু বিরাট কোহলির ফেইক ফিল্ডিংয়ে ৫ রান বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। ভেজা মাঠে খেলা নিয়েও আছে প্রশ্ন। পাকিস্তানের বিপক্ষে সুপার টুয়েলভের গ্রুপ-টু তে শেষ ম্যাচটা খেলার আগে শনিবার এসব প্রসঙ্গ নিয়ে মুখ খুললেন শ্রীরাম। তার মতে ভারতের কাছে ম্যাচটা হারলেও আত্মবিশ্বাস বেড়েছে সাকিব আল হাসানদের।
শ্রীরাম প্রিভিউ ডে-তে কথা বলেন জুম কনফারেন্সে। তিনি বলছিলেন, ‘দেখুন, ম্যাচের আগে যদি কেউ বলতো, আমরা ভারতের সঙ্গে ৫ রানে হারবো- এটা যে কেউ মেনে নিতো। আমার মনে হয়, ভারতকে হারানোর মতো একটা জায়গায় চলে গিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু প্রতিদিন সেই লাইনটা পার করতে পারবো না। তবে এত কাছে আসা ছেলেদের অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।’
কিন্তু তীরে এসে তরী ঠিকঠাক মতো নোঙর করতে না পারার একটা কষ্ট হতো আছেই। ২ নভেম্বর অ্যাডিলেড ওভালে ম্যাচটা হারের পর হতাশা ছুঁয়ে গিয়েছিল ড্রেসিংরুমে। শ্রীধরন শ্রীরাম যেমনটা বললেন, ‘আমার মনে হয় শেষ পর্যন্ত মাত্র পাঁচ রানে হারার পর, ড্রেসিংরুমে সবাই হতাশ ছিল। তারা বুঝতে পেরেছে কত বড় সুযোগ হারিয়েছে। এটা ওদের জন্য অনেক বড় শিক্ষা। দলকে এটা অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে, ভারতের মতো দলকে চ্যালেঞ্জ জানানো আর এত কাছে আসা বোঝায়, আমরা খুব বেশি দূরে নেই।’
সব মিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপটা ইতিবাচকভাবেই দেখছেন শ্রীরাম। তাদের জন্যও চ্যালেঞ্জিং মিশন ছিল এটি। রাসেল ডমিঙ্গোকে সরিয়ে ভারতীয় এই কোচকেই টি-টোয়েন্টির দায়িত্বটা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সেই পরীক্ষায় তিনি কতোটা পাশ সময়ই বলে দেবে। তবে বাংলাদেশ এখন লড়তে শিখেছে। অস্ট্রেলিয়ায় এবার গোটা টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শুধু ছিল হতাশ করা পারফরম্যান্স, বাকি তিনটিই দুর্দান্ত।
তাইতো শ্রীরধরন শ্রীরাম মনে করেন এটি টাইগার ক্রিকেটের নতুন শুরু। ভাল একটা ভিত্তি পেয়ে গেছে দল। সাকিবদের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় এটা নতুন শুরু। আমি জানি না আগে কী হয়েছে, সেখানে ছিলামও না। নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আমরা দুটি ক্লোজ ম্যাচ জিতেছি। ভারতের বিপক্ষে ক্লোজ ম্যাচ হেরেছি, কিন্তু এটা হয়ই। এটাকে আমি নতুন শুরু হিসেবে দেখছি। আমি অতীত নিয়ে পড়ে থাকি না। অতীতে ছিলাম না, তাই মন্তব্য করতে পারি না।’
ঠিক তাই, অতীত নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করারটা ঠিক হবে না। ভারতের বিপক্ষে বাজে আম্পায়ারিং আর ৫ রানে হারের ধাক্কা ভুলে নতুন পথে বাংলাদেশ ক্রিকেট। বিশ্বকাপে রোববার পাকিস্তানের সঙ্গে লড়াই। যেখানে জয় দিয়ে হাসিমুখে সুপার টুয়েলভের লড়াইটা শেষ করতে চান সাকিব-তাসকিনরা!
এটি/এনইউ