ফেদেরারের কীর্তি ছুঁয়ে ফেললেন জকোভিচ
রজার ফেদেরার আর রাফায়েল নাদালের দ্বৈত-শাসনে অনেক আগেই বাগড়া দিয়েছেন নোভাক জকোভিচ। সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের কীর্তিতে সাম্যাবস্থায় থাকা ফেদেরার-নাদালকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ১৮তম গ্র্যান্ড স্ল্যামটি জিতে। সে কীর্তি নতুন করে গড়ার আগে ফেদেরারের আরো একটি কীর্তিকে ছুঁয়েছেন ‘জোকার’। র্যাঙ্কিংয়ের চূড়ায় সবচেয়ে বেশি সময় থাকার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন তিনি, সে কীর্তি ভেঙে ফেলা থেকে এক সপ্তাহের দূরত্বেও চলে এসেছেন জকোভিচ।
পুরুষ এককের শীর্ষে থাকার রেকর্ডটি ছিল ৩১০ সপ্তাহের। এতদিন এ কীর্তিতে শীর্ষেই ছিলেন ফেদেরার। তবে গত ১ মার্চ অ্যাসোসিয়েশন অফ টেনিস প্রোফেশনালসের (এটিপি) র্যাঙ্কিংয়ের চূড়ায় নিজের অবস্থানটা ধরে রেখে সে কীর্তিতে ভাগ বসিয়েছেন জকোভিচ। আগামী এক সপ্তাহে কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছেন না তিনি, ফলে আগামী ৮ মার্চও শীর্ষে থাকবেন তিনিই। তাতে ফেদেরারকে দুইয়ে ঠেলে রেকর্ডটাকে যে একান্তই নিজের করে নেবেন জকোভিচ, তা বলাই বাহুল্য।
গেল মাসে প্রায় ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানিয়ে ফেলা অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন তিনি, ক্যারিয়ারে নবম বারের মতো। তাতে ১৮তম গ্র্যান্ডস্ল্যামটাও অর্জনের খাতায় যোগ হয়েছে তার। যা তাকে নিয়ে এসেছে আরেকটা রেকর্ডের কাছে। টেনিস ইতিহাসে পুরুষ এককে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার কীর্তি ২০টি, রেকর্ডটা ভাগাভাগি করছেন ফেদেরার আর নাদাল। তা থেকে এখন দুটো শিরোপার দূরত্বে চলে এসেছেন জকোভিচ।
ফেব্রুয়ারিতে এ সাফল্যই তাকে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান দখল করে রাখতে সহায়তা করেছে। তাতে ছোঁয়া হয়ে গেছে ফেদেরারকেও। রেকর্ড ৩১০ সপ্তাহ র্যাঙ্কিংয়ের চূড়ায় থাকাটা নিশ্চিত করার পর জকোভিচের কণ্ঠে যেন কিছুটা স্বস্তিই ঝরে পড়ল, ‘সবচেয়ে বেশি সময় র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকার ইতিহাস গড়াটা আমার জন্য স্বস্তির বিষয়ও। কারণ এখন আমার সব মনোযোগ গ্র্যান্ড স্ল্যামে দিতে পারব।’
এ ইতিহাস গড়ার পথে অনেক আগেই পিট সাম্প্রাস, ইভান লেন্ডল, জিমি কনর্সদের মতো কিংবদন্তিদের পেছনে ফেলেছিলেন তিনি। এখন ফেদেরারকে পেছনে ফেলা থেকে আছেন এক সপ্তাহের দূরত্বে।
র্যাঙ্কিংয়ের চূড়ায় শীর্ষ পাঁচ
শীর্ষে থাকা খেলোয়াড় | মোট সপ্তাহ | টানা শীর্ষে থেকেছেন |
জকোভিচ (সার্বিয়া) | ৩১০ | ১২২ |
ফেদেরার (সুইজারল্যান্ড) | ৩১০ | ২৩৭ |
সাম্প্রাস (যুক্তরাষ্ট্র) | ২৮৬ | ১০২ |
লেন্ডল (চেক প্রজাতন্ত্র) | ২৭০ | ১৫৭ |
কনর্স (যুক্তরাষ্ট্র) | ২৬৮ | ১৬০ |
গেল বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নাদালকে হটিয়ে শীর্ষে ফেরেন তিনি। এরপর করোনার কারণে গত ২৩ মার্চ থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত ছিল, র্যাঙ্কিং আবারো চালু হওয়ার পর থেকেই শীর্ষে আছেন তিনি।
র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে জকোভিচ
মেয়াদ | জয়-হার | শীর্ষ দশের বিপক্ষে | ফাইনালের রেকর্ড |
৪ জুলাই ২০১১-৮ জুলাই ২০১২ | ৬৩-১২ | ১৮-৯ | ৪-৪ |
৫ নভে. ২০১২-৬ অক্টো ২০১৩ | ৬২-৯ | ১৮-৬ | ৫-২ |
৭ জুলাই ২০১৪-৬ নভে. ২০১৬ | ১৬৭-১৭ | ৬০-৯ | ২১-৫ |
৫ নভে. ২০১৮-৩ নভে. ২০১৯ | ৫৮-১০ | ১৩-৪ | ৫-২ |
৩ ফেব্রু. ২০২০-বর্তমান | ৩৭-৫ | ৮-১ | ৪-০ |
মোট | ৩৮৭-৫৩ | ১১৭-৩০ | ৩৯-১৩ |
অচিরেই শীর্ষস্থান হারানোর সম্ভাবনাও খুব কম। বর্তমানে ১২০৩০ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে থাকা তিনি দুইয়ে থাকা নাদাল থেকে এগিয়ে আছেন দুই হাজার পয়েন্টের ব্যবধানে। ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবারের মতো শীর্ষে থেকে শেষ করেছেন গেল বছরটি, যাতে ছুঁয়ে ফেলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রাসের রেকর্ডও।
ফেদেরারের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেললেও পুরষ ও নারী মিলে দীর্ঘতম সময় শীর্ষে থাকার রেকর্ড থেকে আরো ১৫ মাসের দূরত্বে আছেন জোকোভিচ। মেয়েদের এককে রেকর্ডটি আছে স্টেফি গ্রাফের দখলে, তিনি শীর্ষে ছিলেন ৩৭৭ সপ্তাহ। পরের দুজনও এগিয়ে আছেন জকোভিচ থেকে। মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা শীর্ষে ছিলেন ৩৩২ সপ্তাহ। আর সেরেনা উইলিয়ামস শীর্ষে ছিলেন ৩১৯ সপ্তাহ।
এনইউ