‘জীবনের সেরা মুহূর্তেও’ আফসোস সাবিনার মনে
বাংলাদেশের নারী ফুটবলে বড় আইকন সাবিনা খাতুন। এক যুগের বেশি সময় জাতীয় দলে খেলছেন। ২০১০ নারী সাফের প্রথম আসর থেকে তার স্বপ্ন এই ট্রফি উঁচিয়ে ধরার। অবশেষে এক যুগ পর সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।
বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করে বেশ তৃপ্ত নারী দলের অধিনায়ক, ‘আমার ক্যারিয়ারে সেরা অর্জন। জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তও বলা চলে। ১২ বছরের অপেক্ষা ছিল এই ট্রফির জন্য। আমার স্বপ্ন ছিল ট্রফি ঘরে আনা। সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।’
এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ট্রফির পাশাপাশি অন্য পুরস্কারও অধিনায়ক সাবিনাময়। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি। এ সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া, ‘আসলে আল্লাহ যখন দেন, সবই দেন। আমি চেষ্টা করেছি মাত্র। দল যখন সাফল্য পায় তখন সফল। ধরে রাখতে পরিশ্রম বেড়ে যায়।’
স্বাগতিক হিসেবে নেপালকে হারানো বেশ কঠিন। সেই কঠিন কাজের আগে অনুজ খেলোয়াড়দের প্রতি তার বার্তা ছিল, ‘সবারই একটা কথা ছিল দর্শক থাকবে। আমার বার্তা ছিল আগের চার ম্যাচের মতোই স্বাভাবিক খেলা খেলতে হবে।’
ম্যাচের দশ মিনিটের মধ্যে ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্নাকে উঠিয়ে নেন ছোটন। বদলি হিসেবে নেমেই শামসুন্নাহার গোল করেন। সেই গোলটিই ম্যাচের গতিপথ নিজেদের দিকে করে দেয় বলে মনে করেন সাবিনা, ‘শামসুন্নাহার ভালো ব্যাক আপ দিয়েছে। প্রথম দিকে গোল পাওয়ায় আমরা উজ্জীবিত ছিলাম।’
এই টুর্নামেন্টের অনেক ম্যাচই ভেজা মাঠে হয়েছে। আজকেও ছিল ভেজা মাঠ। এই মাঠে খেলতে খানিকটা কষ্ট হলেও নিয়তি তাদের পক্ষে ছিল বলে মনে করেন, ‘মাঠ ভালো হলে ভালো হতো। আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই। শেষ পর্যন্ত আমরা জিতেছি সেটাই বড় কথা।’
প্রথমার্ধে ২ গোলের লিড থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে গোল দিয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিল নেপাল। স্বাগতিকরা সিনিয়র ফুটবলার সাবিত্রা ভান্ডারীকে নামিয়ে শেষ চেষ্টা করেছিল। ওই সময় বাংলাদেশের কৌশল সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা কোনো চাপ নেইনি। স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চেয়েছি।’
বাংলাদেশ দলের এই চ্যাম্পিয়নশিপের পেছনে গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকেও অবদান দিয়েছেন সাবিনা, ‘ও দুর্দান্ত কিপিং করেছে। সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার ওর প্রাপ্য।’
এত কিছু প্রাপ্তির মধ্যেও খানিকটা অতৃপ্তি। আজ সাবিনা দক্ষিণ এশিয়ার সেরা খেলোয়াড় অথচ তার গুরু আকবর আলী দেখে যেতে পারলেন না। এত সুখের মধ্যেও খানিকটা বিষাদের সুর তার মনে, ‘আকবর স্যার থাকলে অনেক খুশি হতেন। স্যার নেই তবে ছোটন স্যার আছেন। তিনিও আমার জন্য অনেক করেছেন। আমার মতো তারও এটা প্রথম সাফের শিরোপা। তাকে খুশি করতে পেরে আমিও খুশি।’
এজেড/এনইউ