পিতা-পুত্রের প্রতিনিধিত্বে বাংলাদেশের দাবা অলিম্পিয়াড যাত্রা
বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় খেলা ছিল দাবা। পরিকল্পনাহীন, নেতৃত্বের সংকটে দাবা কাঙ্খিত মাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি। ফলে বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াডে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের দাবাড়ু ও ফেডারেশনের কর্মকর্তারা সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্য বলতে ব্যর্থ হন।
আগামী ২৯ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে ৪৪তম বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াড। আগামীকাল বুধবার দুপুরে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ দল। এই অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের লক্ষ্য ভালো অবস্থান করা। দাবা অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য ৩৩তম অবস্থান ২০১২ বাকুতে। এরচেয়ে উপরে উঠতে পারেনি।
এবার দাবা অলিম্পিয়াডে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কিছু বলেননি দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান, ‘আমরা যদি প্রতি রাউন্ডে তিন বোর্ড ভালো খেলতে পারি তাহলে একটা ভালো ফলাফল সম্ভব।’ তবে এবারের অলিম্পিয়াডটি বাংলাদেশের জন্য বিশেষ। জিয়ার পাশাপাশি তার ছেলে ফিদে মাস্টার তাহসিন তাজওয়ারও যাচ্ছেন অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে।
বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াডে পিতা-পুত্র দেশের প্রতিনিধিত্ব করার ঘটনা বাংলাদেশে প্রথম তো বটেই, বিশ্ব দাবাও খুব একটা নেই, ‘উজবেকিস্তানে বাবা ছেলে গ্র্যান্ডমাস্টার রয়েছে। তবে তারা সম্ভবত দাবা অলিম্পিয়াডে অংশ নেয়নি একসঙ্গে।’ -বলেন জিয়াউর রহমান। বিশ্ব দাবা অঙ্গনে যথেষ্ট বিচরণ আন্তর্জাতিক বিচারক হারুনুর রশিদের। তিনিও বাবা-পুত্রের অলিম্পিয়াড ঘটনা স্মরণ করতে পারলেন না, ‘এটি আসলে সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক বা নিকট অতীতে বাবা-ছেলে অলিম্পিয়াডে খেলার ঘটনা দেখিনি। তবে দুই ভাই, বোন, এ রকম রয়েছে অনেক।’
দাবা অলিম্পিয়াডে দলীয় ভালো পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ফেডারেশনের প্রত্যাশা দুই ফিদে মাস্টার তাহসিন তাজওয়ার এবং মেহেদী হাসান পরাগের আন্তর্জাতিক মাস্টার নর্ম অর্জন। জিয়ার পুত্র তাহসিন নর্মের পাশাপাশি দলীয় ফলাফলে ভূমিকা রাখতে চান, ‘বাংলাদেশকে দাবায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করছি। এটা বিশাল অভিজ্ঞতা আমার জন্য। বোর্ডে সুযোগ পেলে অবশ্যই নিজের সেরাটা দিয়ে দলীয় ফলাফল ভালো করার চেষ্টা করব।’
জিয়া ও তাহসিনের বিষয়টি যেমন আলোচিত তেমনি এসেছে রাণী হামিদের অনুপস্থিতির বিষয়টি। বাংলাদেশ ১৯৮৪ সাল থেকে দাবা অলিম্পিয়াডে যাচ্ছে। এই ৩৮ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম রাণী হামিদবিহীন দল অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে। জাতীয় দাবায় শীর্ষ পর্যায়ে না থাকতে পারায় তিনি এবার নারী দলে থাকতে পারেননি।
এবার নারী দল তিন মাসের বেশি সময় গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের অধীনে অনুশীলন করেছে। পুরুষ দলের অনুশীলন সেভাবে হয় নাই। বিদেশি কোচও ছিল না। এজন্য অবশ্য ফেডারেশন বরাবরের মতো অর্থনৈতিক সংকটই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
অলিম্পিয়াডগামী বাংলাদেশ দল
ফেডারেশন অফিসিয়াল: শহিদ উল্যা
কংগ্রেস ডেলিগেট: সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম
হেড অফ ডেলিগেশন: ড.শোয়েব রিয়াজ আলম
ফেডারশেন কর্মকর্তা: জাকির আহমেদ ও নূর আলম।
বিচারক: হারুন অর রশিদ।
ওপেন বিভাগ: মাসুদুর রহমান মল্লিক (অধিনায়ক), এনামুল হোসেন রাজীব, জিয়াউর রহমান, নিয়াজ মোর্শেদ,ফিদে মাস্টার মেহেদী হাসান পরাগ ও তাহসিন তাজওয়ার জিয়া।
মহিলা: মাহমুদা হক চৌধুরি মলি (অধিনায় ), জান্নাতুল ফেরদৌস, শামীমা শারমিন শিরিন, নাজরানা খান ইভা, নোশিন আঞ্জুম ও প্রতিভা তালুকদার।
এজেড/এটি