শেষ কবে এমন প্রেস কনফারেন্স হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটে!
ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষের ঠিক আগ দিয়ে সংবাদকর্মীদের ব্যস্ততা বেড়ে গেল। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম আসতে পারেন বলে খবর ছড়িয়েছে। মুশফিক নিজে খানিক প্রচার বিমুখ মানুষ, প্রেস কনফারেন্সে খুব একটা পাওয়া যায় না তাকে। এজন্য তার প্রেস কাভার করার সুযোগটা কেউ ছাড়তে চান না। তবে এদিন মুশফিক নয়, এলেন লিটন কুমার দাস।
সাংবাদিক সম্মেলনের অলিখিত নিয়ম হচ্ছে, ম্যাচে বা দিনের খেলায় যিনি ভালো করেন, তাকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানো হয় দলের মুখপাত্র হিসেবে। ঢাকা টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের পক্ষে সেরা পারফর্মার ছিলেন মুশফিক। তবে লিটনও নেহায়েত কম যাননি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলকে খাদের কিনারা থেকে ফেরাতে নিজে খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ১৪১ রানের ইনিংস। মঙ্গলবার তাকেই পাঠানো হয় সংবাদ সম্মলেন।
লিটন প্রেস কনফারেন্স রুমের মূল ফটক দিয়ে ঢুকতে দেখে পাশে বসা এক সহকর্মী বললেন, ‘আজ খবরের জন্য বেশ ভালো অ্যাঙ্গেল (উপাদান) পাওয়া যাবে।’
লিটনকে নিয়ে সাংবাদিক মহলে একটি গল্প আছে। ক্যারিয়ারের শুরুর লগ্নে অভিজ্ঞ এক সাংবাদিকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছিলেন তিনি। এজন্য সাংবাদিকদের বড় একটি অংশের চাপা ক্ষোভ ছিল তার প্রতি। তবে সে সময় প্রতিভার বিচারে বেশ আলোচিত ছিলেন লিটন। দলের সিনিয়র ক্রিকেটার থেকে শুরু করে টিম ম্যানেজমেন্ট আর নির্বাচকরা যেমন তার পক্ষে সাফাই দিতেন, তেমনি তার ব্যাটিং টেকনিকের কারণে সংবাদমাধ্যমের সেই অংশও বিষয়টি ভুলে যায় সহসা।
লিটন নিজের দুঃসময় পেছনে ফেলেছেন নিজ ব্যাটে। এখন ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষ বধে বেশ পরিপক্ব তিনি। তাতে দল যেমন উপকৃত হচ্ছে, ব্যক্তিগত অর্জনের ঝাঁপিও ফুলে-ফেঁপে উঠছে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। বাইশ গজে যেমন পরিপক্ব লিটন, তেমনি ছোট ছোট উত্তরে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে বলার মতো বক্তা তিনি। শেষ ২ বছরে লিটন যেন পরিপূর্ণ এক প্যাকেজ হয়ে উঠেছেন।
লিটনকে নিয়ে সাংবাদিক মহলে একটি গল্প আছে। ক্যারিয়ারের শুরুর লগ্নে অভিজ্ঞ এক সাংবাদিকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছিলেন তিনি। এজন্য সাংবাদিকদের বড় একটি অংশের চাপা ক্ষোভ ছিল তার প্রতি। তবে সে সময় প্রতিভার বিচারে বেশ আলোচিত ছিলেন লিটন। দলের সিনিয়র ক্রিকেটার থেকে শুরু করে টিম ম্যানেজমেন্ট আর নির্বাচকরা যেমন তার পক্ষে সাফাই দিতেন, তেমনি তার ব্যাটিং টেকনিকের কারণে সংবাদমাধ্যমের সেই অংশও বিষয়টি ভুলে যায় সহসা।
২০২১ সালে ৭ টেস্টে ৫ ফিফটিতে প্রায় ৫০ গড়ে (৪৯.৫০) রান করেছেন ৫৯৪। চলমান টেস্ট সহ চলতি বছর আরও সফল তিনি। ৬ ম্যাচের ৯ ইনিংসে রান করেছেন ৫৬.২২ গড়ে ৫০৬। যা চলতি বছর টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তাকে তুলে এনেছে দুই নম্বরে। ইতোমধ্যে ক্যারিয়ার গড়ও বেড়ে ৩৪ ছাড়িয়েছে।
সেই প্রতিভার প্রতিফলন অবশ্য শুরুর দিকে মেলে ধরতে পারেননি লিটন। কিন্তু শেষ ২ বছরে নিজেকে বদলে ফেলে নিজের খেলায় এনেছেন অমূল পরিবর্তন। ক্যারিয়ারের প্রথম ২০ টেস্টে গড় আটকে ছিল ৩০ এর নিচে। অথচ গত দুই বছরে তার ব্যাটিং ঈর্ষান্বিত করবে যে কাউকে।
২০২১ সালে ৭ টেস্টে ৫ ফিফটিতে প্রায় ৫০ গড়ে (৪৯.৫০) রান করেছেন ৫৯৪। চলমান টেস্ট সহ চলতি বছর আরও সফল তিনি। ৬ ম্যাচের ৯ ইনিংসে রান করেছেন ৫৬.২২ গড়ে ৫০৬। যা চলতি বছর টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তাকে তুলে এনেছে দুই নম্বরে। ইতোমধ্যে ক্যারিয়ার গড়ও বেড়ে ৩৪ ছাড়িয়েছে।
এই পারফরম্যান্সের আগে লিটনকে রীতিমত অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থকরা তার মুণ্ডুপাত করেছেন প্রায় প্রতি ম্যাচেই। ট্রল আর তাচ্ছিল্যে লিটনের যেন মুখ দেখানোয় দায়! বাধ্য হয়ে লিটনের পক্ষে সাফাই দিতে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে হয়েছে তার সহধর্মিনীকে। তবে সে সব সময় এখন পেছনে ফেলেছেন লিটন।
মঙ্গলবার লিটনের প্রেস কনফারেন্স শেষে অনেককেই বলতে শোনা গেল, এমন প্রেস শেষ কবে দেখা গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে? এমন মন্তব্যের কারণও আছে বৈকি! এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটে প্রেস কনফারেন্স মানেই যেন বেফাঁস মন্তব্য আর বিতর্কিত আলোচনা। তাতে দেশের ক্রিকেটে লাভের চেয়ে ক্ষতিটাই হচ্ছে বেশি। যে আলোচনাগুলো নিজেদের মধ্যে করা যায়, সেগুলোও চলে আসছে সংবাদমাধ্যমে। এরপর ছড়িয়ে পড়ে সেগুলো।
এই পারফরম্যান্সের আগে লিটনকে রীতিমত অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থকরা তার মুণ্ডুপাত করেছেন প্রায় প্রতি ম্যাচেই। ট্রল আর তাচ্ছিল্যে লিটনের যেন মুখ দেখানোয় দায়! বাধ্য হয়ে লিটনের পক্ষে সাফাই দিতে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে হয়েছে তার সহধর্মিনীকে। তবে সে সব সময় এখন পেছনে ফেলেছেন লিটন।
লিটন এদিন প্রেস কনফারেন্স সামলালেন সুনিপুণভাবে। কখনো কথার ঝাঁপি খুলে বসলেন, কখনো টেনে ধরলেন কথার লাগাম। কখনো পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে। কখনো প্রশ্নের উত্তরে এক চিলতে হাসি দিয়ে বোঝাতে চাইলেন, প্রশ্ন হওয়া উচিৎ ছিল আরো তাৎপর্যপূর্ণ। তবে প্রতিটি প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন লিটন, যার বেশিরভাগই ছিল তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হওয়া সমালোচনা নিয়ে।
সম্প্রতি প্রেস কনফারেন্স তো অনেকই হয়েছে। বিশ্বকাপের মঞ্চে গিয়েও সাংবাদিক বৈঠকে মেজাজ হারাতে দেখা গেছে সাকিব আল হাসানকে। এক প্রশ্নের জবাবে এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলেছেন, ‘স্বপ্ন কি প্রতিদিন পরিবর্তন হয় নাকি? দেশ থেকে আসার সময় তো সেমিফাইনালে খেলার বড় স্বপ্ন নিয়েই আসবো! আর যদি বলেন তাহলে এরপর থেকে বলবো সব ম্যাচ হারতেই আসছি! তাহলে কি আপনারা খুশি হবেন?’
লিটন এদিন প্রেস কনফারেন্স সামলালেন সুনিপুণভাবে। কখনো কথার ঝাঁপি খুলে বসলেন, কখনো টেনে ধরলেন কথার লাগাম। কখনো পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে। কখনো প্রশ্নের উত্তরে এক চিলতে হাসি দিয়ে বোঝাতে চাইলেন, প্রশ্ন হওয়া উচিৎ ছিল আরো তাৎপর্যপূর্ণ। তবে প্রতিটি প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন লিটন, যার বেশিরভাগই ছিল তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হওয়া সমালোচনা নিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকের বলে ‘আয়না’ বিতর্ক, আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ ‘পেইন কিলার’ কাণ্ড কিংবা মুমিনুল হকের ‘আত্মপক্ষ সমর্থন’ আলোচনার জন্য সমালোচনাই কুড়িয়েছে বেশি। সেখানে লিটন এমন প্রাণবন্ত সংবাদ সম্মেলন! স্বাভাবিকভাবে কৌতূহল জাগে, শেষ কবে এমন প্রেস কনফারেন্স হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটে?
টিআইএস/এটি