ব্রুনোর জোড়া গোলে বিশ্বকাপের টিকিট কাটল রোনালদোর পর্তুগাল
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো রীতিমতো ঘোষণাই দিয়ে রেখেছিলেন ম্যাচের আগে, ‘পর্তুগালকে ছাড়া বিশ্বকাপই হবে না’ বলে। মাঠের পারফর্ম্যান্সে সেটা করেও দেখালেন রোনালদোরা। পর্তুগিজ অধিনায়কের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সতীর্থ ব্রুনো ফের্নান্দেজ করলেন জোড়া গোল। তাতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ইউরোপীয় অঞ্চলের প্লে অফ ফাইনালে উত্তর মেসিডোনিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট কাটল পর্তুগাল।
প্রতিপক্ষ উত্তর মেসিডোনিয়া। নাম শুনে আপনার মনে হতে পারে এ আর এমন কি! কিন্তু যে দলটা শেষ এক বছরে হারিয়েছে জার্মানিকে, গেল সপ্তাহে ইতালির বিশ্বকাপ স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে এসেছে প্লে অফের ফাইনালে, সে দলটাকে আর যাই হোক হেলাফেলা করা চলে না। রোনালদোরা তা করেনওনি, পর্তুগিজ অধিনায়ক নিজেই জানিয়েছিলেন সেটা। এস্তাদিও দ্রাগাওয়ে আজ ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে যখন মেসিডোনিয়ার ইতালি বধের নায়ক ত্রায়কোভস্কি আক্রমণে উঠে এলেন, তখন রোনালদোদের সে সতর্কতটা না বেড়েই পারে না।
তবে শুরুর নড়বড়ে ভাবটা কাটিয়ে পর্তুগাল ছন্দে ফিরতে সময় নেয়নি খুব একটা। ১৪ মিনিটে ডিয়োগো জোটার পাস থেকে গোলের খুব কাছেও চলে গিয়েছিলেন রোনালদো, তবে তার শটটা সে যাত্রায় পায়নি সঠিক দিশা, গোলবঞ্চিত থাকে পর্তুগাল।
রোনালদোর আফসোসটা অবশ্য মিটল কিছুক্ষণ পরই। ম্যাচের ৩২ মিনিটে রোনালদোর পাস থেকেই দারুণ এক শটে মহামূল্য গোলটা করে বসেন ব্রুনো ফের্নান্দেজ। তাতে পর্তুগাল এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। এ গোলে রোনালদো-ব্রুনোর কৃতিত্বের সঙ্গে সমান দায় আছে মেসিডোনিয়ান মিডফিল্ডার স্টেফান রিস্টোভস্কিরও। তার ভুল পাস থেকেই যে বলটা পেয়েছিলেন রোনালদো! নিজেদের ভুলে গোল হজম করে মেসিডোনিয়ার মনোবলটাও যেন ভেঙে চুরমার হয় সঙ্গে সঙ্গেই।
গোলটার আগ পর্যন্ত কিছু আক্রমণে স্বাগতিকদের স্নায়ুচাপ উপহার দিয়েছিল মেসিডোনিয়া, গোলের পর ভাটা পড়ে তাতে। পর্তুগালও ধাতস্থ হওয়ার সুযোগ পেয়ে যায় যার ফলে৷ বিরতির আগে উঠেছে বেশ কিছু আক্রমণেও। তবে গোলের দেখা মেলেনি আর, ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় পর্তুগাল।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ছন্দ খুঁজে পাওয়া পর্তুগিজরা বিরতির পরও ছন্দটা ধরে রেখেছে বেশ৷ তবে মাঝেমধ্যে প্রতি আক্রমণের আভাস দিয়ে মেসিডোনিয়ানরা যেন জানান দিচ্ছিল, ম্যাচটা শেষ নয় এখনো। সেটাও শেষ হলো ৬৫ মিনিটে। ব্রুনোর কল্যাণেই পর্তুগাল পেয়ে যায় দ্বিতীয় গোলটা। জোটার বাড়ানো বলে ব্রুনো দারুণ এক ভলিতে পরাস্ত করেন গোলরক্ষক দিমিত্রেভস্কিকে। ২-০ গোলে এগিয়ে বিশ্বকাপের টিকিটটা তখনই কেটে ফেলে স্বাগতিকরা। ম্যাচের বাকি অংশে লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা বারদুয়েক করেছে মেসিডোনিয়া, তাতে লাভ হয়নি। পর্তুগাল সেসব সামলেছে চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায়। রোনালদোরাও চেষ্টা করেছেন, আলোর মুখ দেখেনি সে আক্রমণগুলোও। তবে তাতে ক্ষতি হয়নি একটুও। শেষ বাঁশি বাজতেই ২-০ গোলের জয় নিয়ে পর্তুগাল চলে যায় বিশ্বকাপে।
এনইউ