মরিনিওর চোখে সেরা নন ক্লপ
ফিফা বর্ষসেরা কোচ হওয়ার দৌড়ে কেবল এক প্রিমিয়ার লিগ জেতা ইয়ুর্গেন ক্লপ হারিয়েছেন বছরে পাঁচ শিরোপা জেতা হ্যান্সি ফ্লিককে। এতে পুরস্কারটা ন্যায্য হাতে ওঠেনি বলেই জানালেন টটেনহ্যাম হটস্পার কোচ জোসে মরিনিও। পর্তুগীজ কোচের অভিমত, অদূর ভবিষ্যতে পুরস্কারটা জিততে হলে নতুন টুর্নামেন্ট আবিষ্কার করে জিততে হবে ফ্লিককে!
কোচ নিকো কোভাচ গেলো মৌসুমের মাঝামাঝিতে বায়ার্ন মিউনিখকে রেখে গিয়েছিলেন অকূল পাথারে। সেখান থেকে দায়িত্ব নিয়ে হ্যান্সি ফ্লিক বায়ার্নকে তো ‘রুটিন’ বুন্ডেসলিগা জিতিয়েছেনই, করেছেন ইউরোপসেরাও; সঙ্গে ডিএফবি পোকাল জিতিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে বায়ার্নকে জেতান দ্বিতীয় ইউরোপিয়ান ট্রেবল। ক্লপও অবশ্য অর্জন করেছেন লিভারপুলকে ৩০ বছর পর শিরোপা জেতানোর অনন্য এক কীর্তি।
তবে মরিনিওর চোখে ক্লপের অর্জন মোটেও ফ্লিকের কীর্তিকে ছাপিয়ে যাওয়ার মতো নয়। বললেন, ‘আমি অবশ্যই ব্যথিত হয়েছি এতে। প্রথম মূহুর্ত থেকেই, আর সবার মতো। বিস্ফারিত চোখে দেখছিলাম, এটা কীভাবে হলো!’
এরপর একটু রসিকতা করে বললেন, ‘আমার মনে হয় বায়ার্নকে দুই কিংবা তিনটা নতুন টুর্নামেন্ট খুঁজে বের করে জিততে হবে, তাহলেই কেবল ফ্লিক জিততে পারবে। যদি সে এক মৌসুমে সাতটা শিরোপা জেতে তাহলেই মনে হয় তার জেতা সম্ভব। কারণ আমার বিশ্বাস, সে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বুন্ডেসলিগা, পোকাল, ইউরোপিয়ান সুপার কাপ, জার্মান সুপার কাপ জিতেছে, সে পাঁচটা শিরোপাই জিতেছে আর সবচেয়ে বড়টাও।’
লিভারপুলের বিপক্ষে ‘নেতিবাচক’ কৌশল নিয়ে বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে মরিনিওকে। বলের দখলে প্রতিপক্ষের চেয়ে দলটি পিছিয়ে ছিলো বেশ। স্পার্সদের ২৪ শতাংশ বলের দখলের বিপরীতে লিভারপুলের বলের দখল ছিলো ৭৫.৮। পাস টটেনহ্যাম খেলেছিলো ২৫৪টি, যেখানে ক্লপের শিষ্যরা খেলেছিলো ৮১৩টি। তবে মরিনিও সেসবকে পাত্তা দিচ্ছেন না মোটেও। বললেন, ‘আপনারা বলের দখক শব্দটাকে বেশ ভালোবাসেন, পরিসংখ্যানকেও। বিশেষ করে আপনারা গণমাধ্যম কর্মীরা। আপনারা মাঝে মধ্যে বলেন, এই খেলোয়াড়টা ৯২ শতাংশ সঠিক পাস দিয়েছে। কিন্তু পরিসংখ্যান আপনাকে এটা বলবে না যে খেলোয়াড়টা সব পাস খেলেছে দুই ফিটের দূরত্বে।’
‘সেখানে এটা বলা থাকবে না যে খেলোয়াড়টা একজন ডিফেন্ডার ছিলো, সে পাস দিচ্ছিলো আরেক ডিফেন্ডারের কাছে কিংবা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারকে যে বল বাড়াচ্ছিলো নাম্বার এইটকে। আর গোলের যোগান এসেছে সেই খেলোয়াড়টার কাছ থেকে যার পাসিং অ্যাকিউরেসি ৬৫ শতাংশ, সেই খেলোয়াড়টা যে কঠিন পাস দেয়, কিংবা খেলার দিকটা ঘোরাতে পারে।’
পরিসংখ্যানকে মরিনিও তুলনা দিলেন বাজেভাবে রান্না করা মাংসের সঙ্গে। বললেন, ‘আর তাই পরিসংখ্যান হচ্ছে সেই দুর্দান্ত মাংসের মতো, যা বাজেভাবে রান্না করা হয়েছে। এটা খুব বেশি কিছু দেখাতে পারে না। যা ঠিকঠাক বলে, তা হচ্ছে আপনি কত সুযোগ সৃষ্টি করেছেন আর কতো গোল করতে পেরেছেন।’
লিভারপুলের মুখোমুখি হবার পরে টটেনহ্যামের পরবর্তী প্রতিপক্ষ লেস্টার সিটি। নিজেদের মাঠে আগামীকাল রোববার রাতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
এনইউ