জান্নাতের ধনভান্ডার লাভের দোয়া
দোয়া-দরুদ ও জিকির-আজকারে মুসলমানদের হৃদয় আপ্লুত হয়। রাসুল (সা.) হাদিসে অসংখ্য দোয়া ও জিকির-আজকার শিক্ষা দিয়েছেন। সেগুলোর ব্যাপারে অধিক পরিমাণ তাগিদ দিয়েছেন। যেসব দোয়া ও জিকিরের মাধ্যমে মুমিন বিপুল সওয়াব লাভ করে।
এমন একটি দোয়া হলো (আরবি) :
لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ
উচ্চারণ : লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আল্লাহ সুমহান, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া পাপমুক্তির কোনো পথ নেই, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া ইবাদতের কোনো শক্তি নেই।
আবু মুসা আশআরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) একবার আমাকে বললেন, ‘তোমাকে জান্নাতের অন্যতম ধনভাণ্ডারের কথা কি বলে দেব?’ আমি বললাম, অবশ্যই বলে দিন, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন, لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ (লা হাওলা অলা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) (বুখারি, হাদিস : ২৯৯২; মুসলিম, হাদিস : ২৭০৪, তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৭৪; আবু দাউদ, হাদিস : ১৫২৬
আবু জর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) আমাকে একবার বললেন— ‘আমি কি তোমাকে জান্নাতের গুপ্তধনগুলোর একটির সন্ধান দেবো না? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল। তিনি বলেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। (আহমাদ, হাদিস : ২০৮২৯)
হাজিম ইবনে হারমালা (রা.) বলেন, আমি নবী (সা.)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে বলেন, ‘হে হাজিম! তুমি অধিক সংখ্যায় ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’’ বাক্যটি পড়ো। কেননা তা হলো জান্নাতের গুপ্তধন। (বুখারি, হাদিস ৪২০৪, ৬৩৮৪, ৬৪০৯, ৭৩৮৬; মুসলিম, হাদিস : ৫৮৯,
কাইস ইবনু সাদ ইবনু উবাদাহ (রা.) হতে বর্ণিত আছে, আমি নামাজরত থাকা অবস্থায় নবী (সা.) আমার কাছ দিয়ে গমন করলেন। তিনি নিজের পা দিয়ে আমাকে আঘাত (ইশারা) করে বললেন, আমি তোমাকে কি জান্নাতের দরজাগুলোর একটি দরজা সম্পর্কে জানাব না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ (আল্লাহ ব্যতীত অনিষ্ট দূর করার এবং কল্যাণ লাভের কোনো শক্তি কারো নেই)। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৮১)
কায়স (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি তখন মাত্র নামাজ শেষ করেছি। তিনি আমাকে তার কদম মুবারক দিয়ে আঘাত করে বললেন, ‘জান্নাতের দরজাগুলোর একটি কি তা আমি তোমাকে বলব? আমি বললাম, অবশ্যই। তিনি বললেন, লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৮১)
সাগরের ফেনা পরিমাণ গুনাহ মাফ হয়
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, পৃথিবীর বুকে যে ব্যক্তি বলে, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ তার অপরাধগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির মতো (বেশি পরিমাণ) হয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬০)