বসনিয়ায় প্রথম হিজাবধারী মন্ত্রী
নাইদা হুতা মুমিনোভিক। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার প্রথম হিজাবধারী মন্ত্রী। তিনি সারায়েভো প্রাদেশিক সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। গত ১২ জানুয়ারি নতুন সরকারের কাছে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। কুয়েতের আল-মুজতামায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটা জানা গেছে।
সারায়েভো প্রদেশের ইডেন ফোর্টও নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের মন্ত্রী তিনি। শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। বসনিয়ার ইতিহাসে তিনিই প্রথম হিজাবধারী মন্ত্রী।
সরকারি বিভিন্ন চাকরি, পদে ও নেতৃত্বে নারীদের দেখতে চান নাইদা। আরো বেশি নারীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের কাজে বহু সংখ্যক নারীর অংশ্রগহণ জরুরি। রাজনৈতিক ক্ষেত্র ও নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের আসার ক্ষেত্রে আমরা এখনো শিশু।’
নারীদের নিজের প্রতি আস্থাবান হতে উৎসাহ দেন মুমিনোভিক। তিনি বলেন—
নারীদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। কখনো নিজেকে দুর্বল ভাবা যাবে না। না হলে রাজনৈতিক জীবনে এগিয়ে চলা সম্ভব নয়।
আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বসনিয়া ও হার্জাগোভিনায় নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে মুমিনোভিক বলেন, ‘সারায়েভো সরকারের বিভিন্ন পদে মাত্র চারজন নারী দায়িত্ব পালন করছেন।’
মুমিনোভিক শিক্ষাসেবী ও অধ্যয়নানুরাগী মানুষ। অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার সঙ্গে তাঁর আশৈশব সম্পর্ক। তাঁর জন্ম ১৯৮১ সালে। সারায়েভো নগরীতে। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় যুদ্ধ বাঁধলে সপরিবারে অস্ট্রিয়ায় পাড়ি দেন। ১৯৯৬ সালে যুদ্ধ শেষে বসনিয়ায় ফিরে আসেন। এবং উচ্চমাধ্যমিক পাঠ সম্পন্ন করেন।
ইংরেজি ভাষা সাহিত্য ও আইন বিষয়ে সারায়েভো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার কর্মজীবন শুরু হয়— একটি স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষিকা হিসেবে। এরপর বসনিয়ার একটি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। ২০১৫ সাল থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পারিবারিক জীবনে তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।
বসনিয়ার ও হার্জেগোভিনায় মুসলিমদের ইতিহাস খুবই মর্মন্তুদ। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিন বছরব্যাপী নির্মম যুদ্ধ ছিল। তখন লাখ লাখ মুসলিম পৈশাচিক হত্যার শিকার হয়।
যুদ্ধ শেষে ডেটন শান্তি চুক্তি অনুষ্ঠিত হয়। চুক্তি মতে বর্তমানে পুরো অঞ্চলকে দুটি ফেডারেল অঞ্চলে বিভক্ত। একটি বসনয়িা ও হার্জেগোভিনা। অন্যটি সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রো অঞ্চল। বসনিয়ার ও হার্জেগোভিনায় ১০টি প্রদেশ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। প্রতিটি প্রদেশে নিজস্ব সরকার ও প্রশাসন রয়েছে।