আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম কখন পড়তে হয়?
আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম। এর অর্থ হলো- হে আল্লাহ, আপনার কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। সাধারণত পাঁচটি জায়গায় আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম পড়তে হয়। এখানে সেই স্থানগুলো উল্লেখ করা হলো-
এক. কোরআন তিলাওয়াতের শুরুতে
কোরআন তিলাওয়াত একটি ইবাদত। উসমান (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি হরফ পড়বে, সে একটি নেকি পাবে, আর প্রতিটি নেকি দশ গুণ করে বৃদ্ধি করে দেওয়া হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৯১০)
তাই কোরআন তিলাওয়াতের সময় যাতে শয়তান ধোঁকা দিতে না পারে, সেজন্য কোরআন তিলাওয়াতের পূর্বে আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়ার নিদের্শ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন তুমি কোরআন তিলাওয়াত করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবে।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৯৮)
দুই. নামাজে শয়তান কুমন্ত্রণা দিলে
উসমান বিন আবুল আস (রা.) নবী কারিম (সা.)-কে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! শয়তান আমার মধ্যে এবং আমার নামাজ ও কিরাতের মধ্যে অন্তরায় হয়ে আমার কিরাতে জটিলতা সৃষ্টি করে। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘এ হচ্ছে শয়তান, যাকে ‘খানযাব’ বলা হয়। তুমি তার আগমন অনুভব করলে আল্লাহর নিকট তিনবার আশ্রয় প্রার্থনা করবে (অর্থাৎ আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম পাঠ করবে) এবং বাম দিকে তিনবার থুথু ফেলবে।’ উসমান (রা.) বলেন, এরপর থেকে আমি এমনটি করি। ফলে আল্লাহ তাকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেন।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২০৩)
তিন. রাগ ও ক্রোধে পেয়ে বসলে
রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। তাই রাগের সময় শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হবে। সুলায়মান ইবনে সুরাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন দুইজন লোক গালাগালি করছিল। তাদের একজনের চেহারা লাল হয়ে গিয়েছিল এবং তার রগগুলো ফুলে গিয়েছিল। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘আমি এমন একটি দোয়া জানি, এই লোকটি তা পড়লে তার রাগ দূর হয়ে যাবে। সে যদি পড়ে ‘আউজুবিল্লা-হি মিনাশ শায়তানির রাজিম’— তাহলে তার রাগ চলে যাবে।’ তখন সুলায়মান তাকে বলল, নবী (সা.) বলেছেন, তুমি আল্লাহর নিকট শয়তান থেকে আশ্রয় চাও। সে বলল, আমি কি পাগল হয়েছি?’ (বুখারি, হাদিস : ৩২৮২; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৬৯২)
চার. খারাপ স্বপ্ন দেখলে
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে— যা সে পছন্দ করে না, তাহলে তিনবার বাম দিকে থুথু দেবে। আর তিন বার শয়তান থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় চাইবে (অর্থাৎ আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম পাঠ করবে।) আর যে পার্শ্বে শুয়েছিল, তা পরিবর্তন করবে।’ (অর্থাৎ পার্শ্ব পরিবর্তন করে শুবে)। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২৬২; আবু দাউদ, হাদিস : ৫০২২; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৯০৮)
পাঁচ. মনের মধ্যে শয়তান কুমন্ত্রনা দিলে
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘শয়তানের কুমন্ত্রণা যদি তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২০০; সুরা ফুসসিলাত, আয়াত : ৩৬)