কাজের কারণে নামাজ কাজা করা যাবে কি?
এক ব্যক্তি কাজের কারণে কয়েক ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারেন না। পরে ঘরে এসে তা কাজা পড়েন। মানে সময়ের পরে তিনি আদায় করেন। এটা কতটুকু শরিয়তসম্মত?
উত্তর : কাজা হলো- এটা হচ্ছে এক্সিডেন্ট। হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনার কারণে ববা অসুবিধার কারণে যথা সময়ে নামাজ আদায় করতে না পারলে— সেটার ব্যবস্থা হলো কাজা। কিন্তু নিয়মিতভাবে যদি এটাকে অভ্যাস করা হয় অথবা নিয়মিতভাবে আমি এটাকে যদি অভ্যাস এবং দৈনিক রুটিনে রূপান্তর করি, সেটা কোনোভাবেই শরিয়তে গ্রহণযোগ্য নয়।
আমাকে যেকোনো মূল্যেই অজুর ব্যবস্থা রাখতে হবে। অজু থাকতে হবে এবং রাখতে চেষ্টা করব। আর কাজের ক্ষেত্রে অন্তত ফরজ নামাজটি আদায়ের জন্য হোক— আমাকে একটা পথ খুঁজে বের করতেই হবে। যেমন- টয়লেটে যাওয়াটা আমার প্রয়োজন। না গিয়ে আমি পারব না। আমাকে যেতেই হবে। লাঞ্চ ব্রেক আমাকে দিতেই হবে। একইভাবে নামাজও আমাকে একই পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে, যেহেতু আমি বিশ্বাসি। ওই পর্যায়ে নিয়ে আমাকে নামাজের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিয়মিতভাবে আমি ঘরে এসে পড়ব, এটার সুযোগ ইসলামে নেই।
কাজের ক্ষেত্রে আমরা কীভাবে নামাজ পড়ব? ধরতে পারেন—জোহরের সময় আপনি চার রাকাত নামাজ আদায় করবেন। অন্য সুন্নাতগুলো আদায় করার মতো সময়-ব্রেক আপনাকে দেওয়া হচ্ছে না। তখন অন্তত চার বা পাঁচ মিনিট ব্রেক নিয়ে আপনি যেভাবেই হোক— নামাজ আদায় করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। এমনকি যদি আপনার রুকু-সিজদার ব্যবস্থা যদি নাও করা যায়— ইশারা করে হলেও আদায় করতে হবে। কোনো ননা কোনো উপায় বের করে নিতে হবে। এরকম ঈমানি স্প্রিট যদি থাকে, আল্লাহই আপনার পথ বের করে দেবেন।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে কারিমে বলছেন—
وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا
অর্থ : ‘যারা আমাকে পাওয়ার জন্য আমার হুকুম মানার জন্য চেষ্টা করবে, অবশ্যই আমি তাদের পথ প্রদর্শন করব।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৬৯) অর্থাৎ তাদের রাস্তা দেখিয়ে দেব। আরবি ব্যাকরণ অনুযায়ী অবশ্যই অবশ্যই আমি তাদের জন্য পথ অবারিত করব।
আল্লাহ আমার ঈমানের স্প্রিট দেখতে আল্লাহ চান। ঈমানি চেতনায় চেষ্টা থাকতে হবে— রোজগারের জন্য ও আমার কাজের জন্য জামাত অথবা জুমার নামাজ আমরা যেন কোনোভাবে মিস না করি। রুটি-রুজির ব্যবস্থা আল্লাহ তাআলা করবেন। তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। তবে আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করে দেখেন যে, আমরা ওই পর্যায়ের ঈমান আর বিশ্বাস রাখি নাকি রাখি না।
(সূত্র : সুরা আনকাবুত, আয়াত ৬৯; সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৫৩৫)