নতুন বছরে যে দোয়া পড়বেন
হিজরি নতুন বছর শুরু হতে যাচ্ছে। নতুন বছরে মানুষ আনন্দিত হয়। আবার অনুশোচনা ও দুঃখে ভারাক্রান্তও হয়। নতুন বছর আগমনে যেমন খুশি ও আনন্দ বিরাজ করে। তেমনি জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে যাওয়ার বেদনাও মিশে আছে।
মুসলিমরা নতুন বছরের চাঁদ দেখে আনন্দিত হয়, এটা স্বাভাবিক। পাশাপাশি নতুন চাঁদ দেখার দোয়া পড়ে, এটাও গুরুত্বপূর্ণ। সাহাবি তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) যখন নতুন চাঁদ দেখতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন—
اللهم أهله علينا بالأمن والإيمان، والسلامة والإسلام، ربنا وربك الله.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।
অর্থ : হে আল্লাহ, তুমি ওই চাঁদকে আমাদের ওপর উদিত কোরো নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে। (হে চাঁদ!) আমার ও তোমার প্রতিপালক আল্লাহ। (তাবরানি, হাদিস : ১২/৩৫৬; মাজমাউজ জাওয়াদ, হাদিস : ১০/৩৫৬; সুনান আদ-দারিমি, হাদিস : ১৭২৫)
আরেকটি দোয়ার ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে হিশাম বলেন- আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সাহাবিরা নতুন বছরের আগমনে কিংবা নতুন মাসের শুরুতে এই দোয়া পড়তে অভ্যস্ত ছিলেন। দোয়াটি হলো-
اللَّهُمَّ أَدْخِلْهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ، وَالْإِيمَانِ، وَالسَّلَامَةِ، وَالْإِسْلَامِ، وَرِضْوَانٍ مِنَ الرَّحْمَنِ، وَجَوَار مِنَ الشَّيْطَانِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আদখিলহু আলাইনা বিল-আমনি, ওয়াল ইমানি, ওয়াস সালামাতি, ওয়াল ইসলামি, ওয়া রিদওয়ানিম মিনার রাহমানি, ওয়া ঝাওয়ারিম মিনাশ শায়ত্বানি।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের ঈমান ও ইসলামকে নিরাপদ করুন। আমাদের সুরক্ষা দিন। দয়াময় রহমানের কল্যাণ দান করুন। শয়তানের কুমন্ত্রণার মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন। (আল-মুজাম আল-আওসাত, হাদিস : ০৬/২২১)
আরেকটি বর্ণনায় কিছুটা ভিন্নতায় এসেছে। সেখানে দোয়ার শেষের দুই অংশ আগে-পরে বর্ণিত হয়েছে। তখন দোয়াটি এভাবে হয়—
اللَّهُمَّ أَدْخِلْهُ عَلَيْنَا بِالأَمْنِ ، وَالإِيمَانِ ، وَالسَّلامَةِ ، وَالإِسْلامِ ، وَجَوَار مِنَ الشَّيْطَانِ، وَرِضْوَانٍ مِنَ الرَّحْمَنِ.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আদখিলহু আলাইনা বিল-আমনি, ওয়াল ইমানি, ওয়াস সালামাতি, ওয়াল ইসলামি, ওয়া ঝাওয়ারিম মিনাশ শায়ত্বানি, ওয়া রিদওয়ানিম মিনার রাহমানি।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের ঈমান ও ইসলামকে নিরাপদ করুন। আমাদের সুরক্ষা দিন। শয়তানের কুমন্ত্রণার মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন। দয়াময় রহমানের কল্যাণ দান করুন। (মু’জামুস সাহাবাহ : ০৩/৫৪৩; আল-ইসাবাহ : ০৬/৪০৭-৪০৮)
নববর্ষের শিক্ষা অনেক কিছু। তন্মধ্যে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও মানবতার জন্য ত্যাগ স্বীকার অন্যতম। বছরের প্রথম দিনে ব্যক্তি পুরনো বছরের আত্মপর্যালোচনা করে। নতুন বছরের কর্মপরিকল্পনা সাজায়। আর নবোদ্যমে কর্মতৎপর হয়ে ওঠে। প্রতিটি মানুষের উচিত নবী-জীবনের আদর্শ অনুসরণের জন্য কোরআন-হাদিসের পাশাপাশি বছরব্যাপী সিরাত-সাহিত্য অধ্যয়নের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া।
নববর্ষে হোক জীবনকে ঢেলে সাজানোর নতুন আত্মপ্রত্যয়। আল্লাহ তাআলা সবার জন্য সহজ করে দিন।