টিকা নিয়ে যা বললেন মিজানুর রহমান আজহারী
বিশ্বজুড়ে এখনও করোনার দাপট অব্যাহত। করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের আঘাতে বাংলাদেশ এখন বিপর্যস্ত। আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। কমছে-বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। আর বেশ কয়েকদিন ধরেই সংক্রমণ হার প্রায় ৩০ শতাংশ, যা আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
অতিদ্রুত এই সংক্রমণের রাশ টেনে ধরতে না পারলে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ। করোনা সংক্রমণ রোধে প্রধানতম ও কার্যকর মাধ্যম হলো টিকা। শুরুতে ধীরগতিতে হলেও এখন বিপুল পরিমাণ টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। দেশে ইতিমধ্যে ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না ও সিনোফার্মের টিকা এসেছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার সারাদেশব্যাপী গণটিকা কর্মসূচির মতো বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
টিকা নেওয়ার ব্যাপারে সচেতন করছেন, দেশের বিজ্ঞ আলেম-মাশায়েখ ও ইসলামিক স্কলারগণ। তাদের কাতারে আগেও ছিলেন দেশের প্রখ্যাত আলেম ও সুবক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। গতকাল তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করে ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে তাগিদ দেন। তিনি বলেন-
সার্বিক বিবেচনায় ভ্যাকসিন নেয়াটাই নিরাপদ, তাই ভ্যাকসিন নিন
আলহামদুলিল্লাহ, আজ মালয়েশিয়াতে করোনা ভ্যাকসিন— ফাইজারের দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করলাম। আল্লাহ তাআলা টিকার সব ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে আমাদের মুক্ত রাখুন। এর পুরোপুরি উপকার আমাদের নসিব করুন।
মালয়েশিয়াতে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম বেশ দ্রুত গতিতে চলছে। এটা খুব ইতিবাচক দিক। আপনারা যারা এখনো ভ্যাকসিন নেননি, সম্ভব হলে দ্রুত নিয়ে নিন। যতো দ্রুত ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শেষ হবে, ততো দ্রুত সংক্রমণ কমে আসবে এবং আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
ভ্যাকসিনগুলোর কার্যকারিতা ভিন্ন ভিন্ন হলেও, সব ভ্যাকসিন একটা কাজ করতে প্রায় শতভাগ সক্ষম। আর সেটা হচ্ছে— শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা আপনাকে অতি মাত্রায় অসুস্থ হওয়া এবং সংকটাপন্ন হওয়া থেকে রক্ষা করবে। সুতরাং যে ভ্যাকসিনই আগে পাবেন, আল্লাহর উপর ভরসা করে সেটাই নিয়ে নিন।
ভ্যাকসিনের দুই ডোজ নেয়ার পরেও, নিয়মিত মাস্ক পড়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই নিরাপদ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এমনটাই বলছে। বিশেষ করে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করাটা অত্যন্ত জরুরী। কারণ ভ্যাকসিন আপনাকে শতভাগ সুরক্ষা দিতে পারবে না।
ভ্যাকসিনের কাজ হলো শরীরে ভাইরাসের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করা। ভ্যাকসিন নেয়া থাকলে, আপনি আক্রান্ত হলেও হয়তো ক্রিটিকাল সিচুয়েশনে পড়তে হবে না। অথবা আপনি করোনা ভাইরাস বহনকারী হলেও, ভ্যাকসিন নেয়ার কারণে হয়তো নিজে আক্রান্ত হবেন না, কিন্তু ভ্যাকসিন নেয়নি এমন লোকদের সংস্পর্শে গেলে, আপনার মাধ্যমে তারা আক্রান্ত হতে পারে।
তাই, কোন দেশের বেশিরভাগ মানুষের টিকা দেয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে, শুধুমাত্র তখনই কেবল মাস্কের বাধ্যবাদকতা উঠিয়ে নেয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করা যেতে পারে। তা না হলে ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রমেও খুব বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব নয়। তাই, এই মুহূর্তে প্রতিটি দেশে গণ টিকার বিকল্প নেই।
তবে মনে রাখতে হবে, টিকা হচ্ছে ওয়াসিলা। প্রকৃত সুরক্ষাদাতা হচ্ছেন মহান আল্লাহ তাআলা। তাই তার উপরই আমাদের সকল আস্থা ও ভরসা। আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে সুস্থ রাখুন। নিরাপদে রাখুন। করোনা মহামারি থেকে মুক্তি দিন।