কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য যা করবেন
কোরবানি একটি ইবাদত। অন্যান্য ইবাদত যেমন আল্লাহর জন্য করা হয়, কোরবানিও ঠিক তেমন তার সন্তুষ্টির জন্য করতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন, একমাত্র তার উদ্দেশেই হয়। অন্য কোনো উদ্দেশ্য যেন মুখ্য না হয়, মনে স্থান না পায়। সে ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে যদি কোরবানি করা হয়, তাহলে তা আল্লাহর কাছে কোরবানি গৃহীত হবে না।
অনুরূপভাবে যদি অংশীদারদের কারও নিয়ত শুদ্ধ না থাকলে, সবার কোরবানি অশুদ্ধ হবে। অথবা যদি কারও অর্থ হালাল না থাকে, তাহলে তার মতো বাকি অংশীদারদের কোরবানিও নষ্ট হয়ে যাবে। সুতরাং অংশীদার নির্বাচন করার সময় অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে হবে।
আমাদের দেশে অনেক সময় দেখা যায়, অর্থ-বিত্ত ও সম্পদ-বৈভব প্রকাশের জন্য অনেকে কোরবানি দেন। কারণ, লোকে বলবে অমুক এতটি পশু ও এত বড় পশু কোরবানি দিয়েছে। অতএব, ভুলে গেলে চলবে না যে— নিজের ধন প্রদর্শন ও বিত্তের মহড়া দেওয়ার জন্য কোরবানি দিলে কোরবানি হবে না।
পশু কেনার অর্থ হালাল হতে হবে
হারাম অর্থের কোনো ইবাদত শুদ্ধ হয় না। হারাম অর্থের মাধ্যমে সওয়াবের আশা করাও গুনাহর কাজ। হালাল অর্থ দিয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী— ছোটখাটো পশু কোরবানি দিয়েও আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আল্লাহর কাছে কোরবানির পশুর না গোশত পৌঁছায়, না রক্ত পৌঁছায়; বরং তার কাছে পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৭)
আবার কারও কারও মনের অভিব্যক্তি হলো— ‘কোরবানির দিন আমার সন্তান কার মুখের দিকে চেয়ে থাকবে।’ তাই তারা দেনা-কর্জ করে কোরবানি করেন, অথচ এভাবে করলে কোরবানি হবে না; শুধু গোশত খাওয়া হবে।
কোরবানির দুইটি গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা
একান্নভুক্ত পরিবারের মধ্যে একাধিক ব্যক্তির কাছে যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে তাদের প্রত্যেকের ওপর ভিন্ন ভিন্ন কোরবানি ওয়াজিব। (কিফায়াতুল মুফতি : ৮/১৭৮)
অংশীদারের ভিত্তিতে কোরবানি করলে— গোশত ওজন করে বণ্টন করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করা জায়েজ নেই। তবে হাড্ডি-মাথা ইত্যাদি যেসব অংশ সাধারণত সমানভাবে ভাগ করা যায় না, সেগুলো অনুমান করে ভাগ করা যাবে। এতে সামান্য কমবেশি হলে সমস্যা নেই। (ফাতাওয়া কাজিখান : ৩/৩৫১)