একা অজু করতে অক্ষম ব্যক্তি তায়াম্মুম করতে পারবে?

ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান নামাজ আদায়ের জন্য পবিত্রতা আবশ্যক। পবিত্রতা ছাড়া নামাজ আদায় করা সম্ভব নয়। নামাজের জন্য সাধারণত অজুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা হয়। কোনো বিশেষ পরিস্থিতির কারণে অজু করা সম্ভব না হলে তায়াম্মুম করা যায়।
অজুর পরিবর্তে তায়াম্মুম বৈধ হওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। তায়াম্মুম বৈধ হওয়ার শর্তগুলো হলো—
তায়াম্মুম বৈধ হওয়ার অপারগ পরিস্থিতি হলো—
- ব্যক্তি ও পানির মধ্যের দূরত্ব এক মাইল বা এর চেয়ে বেশি হওয়া।
- পানি ব্যবহারের কারণে রোগ সৃষ্টি বা বৃদ্ধির সমূহ সম্ভাবনা অথবা প্রাণ বা অঙ্গহানির আশঙ্কা হলে।
- পানি এত কম যে ব্যবহার করে ফেললে নিজে অথবা অন্যরা পিপাসাকাতর হয়ে পড়বে।
- পাশেই কূপ বা পুকুর আছে, কিন্তু পানি এত নিচে যে তা থেকে পানি উঠানোর কোনো ব্যবস্থা নেই।
- পানি কাছেই আছে, কিন্তু দুশমন অথবা ভয়ংকর কোনো পশু-প্রাণীর কারণে পানি অর্জন করতে অপারগ।
কোনো ব্যক্তি যদি এতোটা বৃদ্ধ বা অসুস্থ হয় যে, তিনি নিজে অজু করতে পারেন না, তবে কেউ অজু করিয়ে দিলে অজু করতে পারেন। এমন ব্যক্তির জন্য অজু করিয়ে দেওয়ার কেউ থাকলে অজু করতে হবে। তায়াম্মুম করা যাবে না। আর অজু করিয়ে দেওয়ার মতো কেউ না থাকলে তায়াম্মুম করা যাবে এবং তায়াম্মুম করে নামাজ পড়া যাবে। (বাদায়েউস সানায়ে ১/১৭১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৮; রদ্দুল মুহতার ১/২৩৩)
আরও পড়ুন
তায়াম্মুম করার নিয়ম
তায়াম্মুম করার ইচ্ছাকারী ব্যক্তি উভয় হাতের কাপড়গুলো কনুইয়ের ওপরে উঠিয়ে নেবে। তায়াম্মুম দ্বারা নামাজ পড়ার নিয়ত করে বিসমিল্লাহ পাঠ করবে। নিজের উভয় হাতের তালুকে আঙুলগুলো খোলা রেখে মাটির ওপর রাখবে। হাতকে মাটির ওপর সামান্য ঘষবে। তারপর উভয় হাত উঠিয়ে ঝেড়ে ফেলবে। এরপর পুরো মুখমণ্ডল মাসেহ করবে।
অতঃপর আগের মতো উভয় হাতের তালু আঙুল খোলা রেখে মাটির ওপর রেখে সামান্য ঘষবে। এরপর নিজের বাঁ হাত দ্বারা ডান হাত কনুই পর্যন্ত মাসেহ করবে। এরপর ডান হাত দ্বারা বাঁ হাত কনুই পর্যন্ত মাসেহ করবে। তাতে তায়াম্মুম পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। এরপর তা দ্বারা ফরজ, নফল সব ধরনের ইবাদত আদায় করতে পারবে। (কিতাবুল আসার লি আবি ইউসুফ : ৭৭; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১/১৬০)