জুমাতুল বিদায় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রমজানের শেষ জুমাকে জুমাতুল বিদা বলা হয়। কোরআন হাদিসে কোথাও জুমাতুল বিদা নিয়ে বিশেষ কোনো ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়নি। তবে জুমার দিন এবং রমজানের শেষ জুমা হওয়ার কারণে এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। এই দিন আমল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। জুমাতুল বিদা মনে করে কোনো বিশেষ আমল ইবাদত করা যাবে না। অন্যান্য জুমার দিনের মতো এই জুমাতেও তাড়াতাড়ি মসজিদে গমন, আল্লাহর কাছে দোয়া, তাসবিহ তাহলিল-সহ বেশ কিছু ইবাদত করা যেতে পারে।
বিজ্ঞাপন
ফজরের পর সূরা ইয়াসিন তিলাওয়াত
ইয়াহইয়া ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে, সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুখে-স্বস্তিতে থাকবে। যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে, সে সকাল পর্যন্ত শান্তিতে থাকবে।’ (আহকামুল কোরআন লিল-কুরতুবি : ২/১৫)
বিজ্ঞাপন
এছাড়াও সুরা ইয়াসিন পড়ার অনেক ফজিলত রয়েছে। প্রতিদিন সকালে সুরা ইয়াসিন পড়তে পারি আমরা।
পরিস্কার, পরিচ্ছন্নতা অর্জন
বিজ্ঞাপন
হাদিসেবিভিন্ন উপায়ে পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং নানাবিধ শিক্ষা দেয়া হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা রক্ষাকে ঈমানের অংশ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আবু মালেক আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক।’ (মুসলিম, হাদিস : ২২৩)
ইসলামে ব্যক্তির পরিচ্ছন্নতা ও গৃহের পরিচ্ছন্নতা কোনোটাই বাদ যায়নি। ব্যক্তির পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় অন্তত জুমাবারে গোসলের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এমনকি হাদিসে এ ক্ষেত্রে ওয়াজিব বা অত্যাবশ্যক বলা হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার দিন (শুক্রবার) গোসল করা প্রতিটি সাবালক ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৭৯)
তাড়াতাড়ি মসজিদে গমন
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবাত-এর গোসলের মতো গোসল করে এবং নামাজের জন্য আগমন করে সে যেন একটি উট কোরবানি করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন একটি গাভী কোরবানি করল। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা কোরবানি করল। চতুর্থ পর্যায়ে আগমন করল সে যেন একটি মুরগী কোরবানি করল। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন একটি ডিম কোরবানী করল। পরে ইমাম যখন খুতবা প্রদানের জন্য বের হন তখন ফেরেশতাগণ জিকির (খুতবা) শোনার জন্য হাজির হয়ে থাকেন।
আল্লাহর কাছে দোয়া করা
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল (সা.) বলেছেন, একদিন হজরত জিবরাঈল (আ.) আমার নিকট আসেন, তার হাতে ছিলো সাদা কাচের টুকরা; তিনি বললেন এটি জুমা আপনার রব যা আপনার উপর ফরজ করেছেন। যাতে আপনার জন্য এবং আপনার পর উম্মতের জন্য একটি দলিল হয়।
রাসূল (সা.) প্রশ্ন করলেন, এতে আমাদের জন্য কি আছে? হযরত জিবরাঈল আমীন বলেন, এতে এমন এক সময় রয়েছে, সে সময় কেউ নিজের কোন নেক মাকসূদ পূরণের জন্য দোয়া করলে তা নিঃসন্দেহে কবুল হয়।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত তিনি বলেন- রাসূল (সা.) বলেন অবশ্য জুমার দিনে এমন একটা সময় আছে তখন কোন মুসলিম বান্দা আল্লাহর কাছে কল্যাণকর কিছু কামনা করলে অবশ্যই তাকে তা দেয়া হয়। (বুখারি : ৪/৮৫২)