ইতিকাফকারী সাহরির জন্য ডাকতে পারবেন?

ইতিকাফের সময় সার্বক্ষণিক মসজিদে অবস্থান করতে হয়। পুরোটা সময় ইবাদত-বন্দেগীতে কাটাতে হয়। অনর্থক কথাবার্তা থেকেও বিরত থাকা জরুরি। রমজান মাসে সাহরির সময় মসজিদের মাইকে এলাকাবাসীকে ডাকার প্রচলন রয়েছে। সাধারণ মসজিদের মুয়াজ্জিনরাই সাহরির জন্য ডাকেন।
কখনো কোনো কারণে যদি মুয়াজ্জিন বা মসজিদের দায়িত্বশীল কেউ ডাকতে না পারেন, তাহলে ইতিকাফকারী ব্যক্তিও সাহরির জন্য ডাকতে পারবেন। এক্ষেত্রে শর্ত হলো—
মাইক মসজিদের ভেতরে থাকতে হবে। যদি মাইক মসজিদের ভিতরে হয়, তাহলে দিতে পারবে। এতে ইতিকাফ নষ্ট হবে না। কিন্তু মসজিদের বাইরে হলে পারবে না। ইলান দিতে বাইরে বের হলে ইতিকাফ ভেঙ্গে যাবে। তবে ইতিকাফকারীর জন্য জিকির, তেলাওয়াত ও অন্যান্য ইবাদত ছাড়া অন্য কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।
আরও পড়ুন
যেসব কারণে ইতিকাফ ভেঙে যায়
শেষ দশকের সুন্নাত ইতিকাফকারীর জন্য মানবীয় ও শরয়ি বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো কারণে মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়, বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে।
সুতরাং ফরজ গোসল ছাড়া গরম ও গায়ের দুর্গন্ধের কারণে গোসল করার জন্য বের হওয়া জায়েজ নেই। হ্যাঁ, যদি অতীব প্রয়োজন হয় এবং মসজিদে গোসলের সুব্যবস্থা থাকে, তাহলে মসজিদেই গোসল করবে অথবা ভেজা গামছা দিয়ে শরীর মুছে ফেলবে। আর ইস্তেঞ্জা করতে গিয়ে অজু পরিমাণ স্বল্প সময়ের মধ্যে সাবান ইত্যাদি ছাড়া স্বাভাবিক গোসল করতেও কোনো অসুবিধা নেই। (রদ্দুল মুহতার : ২/৪৪০, ২/৪৪৫, আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৫১৫
জানাজা ও রোগীর সেবা ইত্যাদির জন্য মসজিদ থেকে বের হলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে। (ফাতাওয়া শামি : ২/২১৩)
ইতিকাফ অবস্থায় মেসওয়াক অথবা ব্রাশ করার জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়া যাবে না। গেলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। হ্যাঁ, অজু করার জন্য বের হলে তখন মেসওয়াকও করে নেবে। শুধু মেসওয়াক বা ব্রাশ করার জন্য বাড়তি সময় যাতে নষ্ট না হয়। (ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৪৩৯) এ হিসাবে ফোনে কথা বলার জন্যও মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি নেই।
ইতিকাফের জন্য রোজা শর্ত। তাই কেউ যদি অসুস্থতার দরুন অপারগ হয়ে রোজা ভাঙতে হয়, তবে ইতিকাফও ভেঙে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৪৩১)
অসুস্থতার দরুন নিরুপায় হয়ে ডাক্তারের কাছে গেলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে। তবে অপারগতার দরুন গুনাহগার হবে না। (ফাতাওয়া কাজী খান : ১/২২৩)