আল্লাহ বান্দার কতটা কাছে? যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

আল্লাহ তায়ালা বান্দার নিকটবর্তী থাকেন এবং তাকে সবসময় নিজের রহমতে ঢেকে রাখেন। কিন্তু মানুষ আল্লাহকে নিজের থেকে দূরে মনে করে তার সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি করে। অথচ আল্লাহ তায়ালা সবসময় মানুষের কাছে থাকেন এবং তার প্রতি অনুগ্রহ ও দয়া প্রদর্শন করেন।
জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, আল্লাহ খুব দূরের সত্তা, তাকে সহজে কাছে পাওয়া যায় না, এ রকম একটি ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। আসলেই কি আল্লাহ দূরের সত্তা?
মহান আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, আর আমি তার গলার ধমনী হতেও অধিক নিকটে (সূরা ক্বাফ ১৬)।
একটি হাদিসে কুদসিকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, আল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে একহাত এগিয়ে যাই। কেউ আমার দিকে একহাত এগিয়ে এলে আমি তার দিকে দুইহাত এগিয়ে যাই। আর কেউ আমার দিকে হেঁটে হেঁটে এলে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।
আরও পড়ুন
আপনি হাঁটা শুরু করলে যে সত্তা আপনার দিকে দৌড়ে আসেন, তিনি কি পর হতে পারেন?
আল্লাহর রহমত মানুষের কতটা কাছে তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আল্লাহ রহমত বা দয়া সৃষ্টি করে সেটাকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। একদিকে রেখেছেন ৯৯ ভাগ আর অন্যদিকে রেখেছেন ১ ভাগ। এই একভাগ ভালোবাসা তিনি পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমগ্র সৃষ্টিকুলের মধ্যে বণ্টন করে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, একভাগ দয়ার ক্ষুদ্র একটি অংশ পেয়ে আমরা আমাদের সন্তানদের কত ভালোবাসি! এই একভাগ ভালোবাসার একটি ক্ষুদ্রাংশ পেয়ে হিংস্র বাঘিনী তার শাবককে দুধপান করায়।
এই একভাগ ভালোবাসার একটি ক্ষুদ্রাংশ পেয়ে সন্তানদের পৃথিবীতে আনতে গিয়ে মাকড়সা নিজের জীবনকে বিসর্জন দেয়।
এই একভাগ ভালোবাসার একটি ক্ষুদ্রাংশ পেয়ে একটি মুরগি প্রবল বৃষ্টিতে ভিজেও ছানাদের বুকের নিচে আগলে রাখে। তাহলে বাকি নিরানব্বই ভাগ দয়া যার কাছে সঞ্চিত আছে, সৃষ্টির প্রতি তার মমতা কতখানি হতে পারে?
তিনি বলেন, আল্লাহ পর নন, তিনি আমাদের বড় আপন। তিনি শুধু চান, কখন আমরা তাকে ডাকব। তাকে হৃদয় থেকে ডাকুন, তার উপস্থিতি আপনি অনুভব করতে পারবেন। আর চলার পথে যিনি আল্লাহকে অনুভব করার গুণ অর্জন করে ফেলেন, পৃথিবীর কোনো দুঃখতাপ তাকে বিচলিত করতে পারে না।