রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে এলো রজব মাস
শুরু হয়েছে হিজরী নববর্ষের সপ্তম মাস রজব। এই মাসটি মুসলিম বিশ্বের জন্য রমজান মাসের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। এই মাস শুরু দুই মাস পরেই শুরু হয় রমজান মাস। রজব ও রমজানের মাঝে থাকে একটি মাস। সে মাসটি হলো শাবান। সেদিন বিবেচনায় রমজান মাসের আর মাত্র দুই বা এর থেকেও কম সময় রয়েছে।
রাসূল সা. রজব মাস থেকেই রমজান মাসকে স্মরণ করতেন এবং এ মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করতেন। রজব মাস থেকেই তিনি রমজানের বরকত লাভের জন্য আল্লাহ তায়ালা কাছে দোয়া করতেন। দোয়ার মাধ্যমে প্রার্থনা করতেন রজব মাসে আল্লাহ তায়ালার যত বরকত রয়েছে তা যেন তিনি লাভ করতে পারেন এবং রমজান মাস পর্যন্ত জীবন লাভ করতে পারেন।
হাদিসে রজব মাস সম্পর্কিত বিখ্যাত একটি দোয়া বর্ণিত হয়েছে। এই দোয়াটি রাসূল সা. ও সাহাবিরা রজব, শাবান দুই মাসেই পড়তেন। অনেক বেশি পড়তেন বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
দোয়াটি হলো—
এ মাস শুরু হলে তিনি এই দোয়া পড়তেন,
আরবি :
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ وَشَعْبَانَ وَبلغنا رَمَضَانَ
বাংলা উচ্চারণ :
‘আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করে দিন। আর আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ ( সুনানে নাসায়ি ও মুসনাদে আহমাদ)।
হিজরি বর্ষের অন্যান্য মাসের মধ্যে রজব মাস অতীব সম্মানিত ও মর্যাদাবান। সবিশেষ তাৎপর্যবহ ও বরকতময়। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই মহান আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাসের সংখ্যা বারোটি। এর মধ্যে চারটি হচ্ছে (যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্য নিষিদ্ধ) সম্মানিত। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৩৬)
রজব মাস সম্বন্ধে নবী (সা.) থেকে আবু বকর (রা.) বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, ‘বছর হচ্ছে বারো মাস। এর মধ্যে চার মাস হারাম (নিষিদ্ধ)। চারটির মধ্যে তিনটি ধারাবাহিক : জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও (মুদার গোত্রের) রজব মাস; যে মাসটি জুমাদাল উখরা ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৬৬২; মুসলিম, হাদিস : ১৬৭৯) ‘আশহুরুল হুরুম’ বা সম্মানিত এ চারটি মাসের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে।
এছাড়াও এই মাসে ইসলামের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মেরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে জানা যায়। এই মাসটি বিশেষ তাৎপর্যমণ্ডিত। এই মাসের বিশেষ দোয়া, আইয়ামে বিজ ও সাপ্তাহিক দুই দিনের রোজা প্রতি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।