স্ত্রীর গয়নার জাকাত কে দেবেন?
ব্যক্তির পেশা ও জীবনযাপন ভেদে সম্পদ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। আমাদের দেশে সাধারণত পুরুষের তুলনায় নারীর কর্মসংস্থান ভিন্ন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা সাংসারিক কাজ করেন। ঘরের বাইরে তাদের কর্মসংস্থানের পরিবেশ খুব একটা নেই।
সংসারি নারীদের কাছে নগদ অর্থ থাকে না খুব একটা। তবে তাদের বিভিন্ন ধরনের গয়না, স্বর্ণালঙ্কার থাকে। এসব সম্পদের জাকাত দিতে হয়। নারীর কাছে যেহেতু নগদ টাকা থাকে না তাই স্বর্ণালঙ্কারের জাকাতের ক্ষেত্রে অনেকেই একটি প্রশ্ন করে থাকেন, নারীর স্বর্ণালঙ্কারের জাকাত কে আদায় করবেন? স্বামী নাকি স্ত্রী নিজেই?
এ ক্ষেত্রে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো—
স্ত্রীর অলংকারের জাকাত আদায় করা স্ত্রীর উপরই ফরজ। জাকাত সম্পদের মালিকের উপরই ফরজ হয়। অবশ্য স্বামী যদি স্ত্রীর অনুরোধে বা অনুমতিক্রমে খুশি মনে স্ত্রীর জাকাত আদায় করে দেয় তবে তা আদায় হয়ে যাবে। এবং স্বামী সওয়াবের ভাগী হবে। বরং সামর্থ্যবান স্বামীর জন্য অর্থের সাথে জড়িত ফরজগুলো আদায়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীর সহযোগিতা করাই বাঞ্ছনীয়।
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/৪৭০, ৮/২৩০; আহকামুল কুরআন জাসসাস ৩/১০৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৮; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৫৬০
আরও পড়ুন
জাকাত
কারো কাছে সাড়ে সাত ভরি (তোলা) স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি (তোলা) রুপার থাকলে তার ওপর জাকাত আদায় করা ফরজ। সোনা ও রুপা উভয়টি যদি কারও কাছে থাকে এবং এর কোনোটাই নিসাব পরিমাণ না হয়; তবে উভয়টির মূল্য হিসাব করে দেখতে হবে। মূল্য যদি একত্রে রুপার নিসাব পরিমাণ হয়ে যায়, অর্থাৎ ৫২.৫ ভরি রুপার মূল্যের সমান হয়ে যায়, তবে জাকাত আদায় করতে হবে।
আর যে সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ, তার ৪০ ভাগের এক ভাগ (২.৫০%) জাকাত দেয়া ফরজ। সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করে শতকরা আড়াই টাকা, হাজারে ২৫ টাকা বা লাখে আড়াই হাজার টাকা হারে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কাপড়চোপড় অথবা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিলেও জাকাত আদায় হবে। (আবু দাউদ: ১৫৭২; সুনানে তিরমিজি: ৬২৩)