জান্নাতের নেয়ামত ও জান্নাতিদের নিয়ে যা বলেছেন প্রিয়নবী সা.
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা হজরত আদম আলাইহিস সালামকে তার যথাযোগ্য গঠনে সৃষ্টি করেছেন, তার উচ্চতা ছিল ৬০ হাত। তিনি তাকে সৃষ্টি করে বলেন, তুমি যাও। উপবিষ্ট ফেরেশতাদের এই দলকে সালাম করো এবং তুমি মনোযোগসহ শুনবে তারা তোমার সালামের কী জবাব দেয়। কারণ এটাই হবে তোমার ও তোমার বংশধরের সম্ভাষণ (তাহিয়্যা)।
তাই তিনি গিয়ে বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম।’ তারা জবাবে বলেন, ‘আসসালামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ।’ তারা বাড়িয়ে বলেন, ‘ওয়া রহমাতুল্লাহ’ বাক্যটি। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তারা আদম আলাইহিস সালামের আকৃতিবিশিষ্ট হবে। তার পর থেকে এ পর্যন্ত মানুষের আকৃতি ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। (বুখারি, হাদিস, ৬২২৭)
হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জান্নাত তোমাদের কারো জুতোর ফিতার চেয়েও বেশি কাছে এবং জাহান্নামও এমনই।’ (সহিহ বুখারী, হাদিস, ৬০৩৮)
এই হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে , জান্নাত ও জাহান্নাম মানুষের পায়ে হেঁটে চলা রাস্তার মতোই খুব কাছেই। কারণ, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করার উদ্দেশ্যে মানুষ এমন কোনো ভালো আমল করল এবং সে এর মাধ্যমে ধারণাও করেনি যে, তা তাকে কোথায় পৌঁছাবে, কিন্তু দেখা গেল এই আমল তাকে চিরস্থায়ী জান্নাতে পৌঁছে দিলো।
আরও পড়ুন
সাহল ইবনু সাদ আস সাইদি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এক সমাবেশে উপস্থিত ছিলাম। তিনি জান্নাতের গুণকীর্তন করে শেষে বললেন, এতে এমন সব নিয়ামাত রয়েছে যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কান কখনো শোনেনি এবং কোন অন্তর কখনো কল্পনাও করেনি। এরপর তিনি (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঠ করলেন- ‘তারা শয্যা ত্যাগ করত, তাদের প্রতিপালককে ডাকে, আশায় ও আশংকায় এবং তাদেরকে যে রিজিক দান করেছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন মনোমুগ্ধকর কী লুকায়িত রাখা হয়েছে তাদের কর্মফল স্বরূপ। (সূরা আস সাজদাহ, আয়াত : ১৬-১৭)। (মুসলিম, হাদিস : ৬৮৭৪)
আবূ সাঈদ আল খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জান্নাতী লোকদেরকে লক্ষ্য করে আল্লাহ তায়ালা বলবেন, হে জান্নাতীরা! তারা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা আপনার আনুগত্যের জন্য উপস্থিত আছি। যাবতীয় কল্যাণ আপনারই হাতে। তারপর তিনি বলবেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট হয়েছো?
তারা জবাব দিবে, হে আমাদের রব! কেন আমরা সন্তুষ্ট হব না? অথচ আপনি আমাদেরকে এমন বস্তু দান করেছেন যা আপনার সৃষ্টি জগতের অন্য কাউকে দান করেননি।
তিনি বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এর থেকে উত্তম বস্তু দান করব না? তারা বলবে, হে পালনকর্তা! এর চাইতে উত্তম বস্তু আর কি হতে পারে? এরপর আল্লাহ বলবেন, আমি তোমাদের উপর আমার সন্তুষ্টি নাজিল করব। এরপর তোমাদের উপর আমি আর কখনো অসন্তুষ্ট হব না। (মুসলিম শরিফ, হাদিস : ৬৮৭৮)