শাম অঞ্চলে সংঘটিত মুতার যুদ্ধে যে সাহাবিরা শহিদ হয়েছেন
৮ম হিজরির জুমাদাল উলা মোতাবেক ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে রাসুলুল্লাহ সা. হারিস বিন উমায়ের আযদী রা.-কে একটি পত্রসহ বুসরার শাসকের কাছে প্রেরণ করেন। এ সময় বালক্বা নামক স্থানে নিযুক্ত ছিলেন তৎকালীন রোম সম্রাটের গর্ভণর শোরাহবিল বিন আমর গাসসানী। তিনি রাসূল সা,-এর দূত হারিস রা.-কে বন্দী করে হত্যা করেন।
রাষ্ট্রীয় দূত এবং সংবাদ বাহকদের হত্যা করার ব্যাপারটি সব চাইতে নিকৃষ্ট কাজ এবং জঘন্যতম অপরাধ। এ ধরণের কাজ ছিল যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। রাসূলুল্লাহ সা. যখন এ সংবাদ অবগত হলেন তখন মুসলিমদের জন্য যুদ্ধ ছাড়া পাল্টা জবাব দেওয়ার মতো আর কোন পথ খোলা ছিল না।
যুদ্ধের জন্য রাসূল সা. ৩০০০ হাজার সৈন্যের একটি বাহিনী তিনি প্রস্তুত করলেন। সৈন্যদলের সেনাপতি নিযুক্ত করলেন জায়েদ বিন হারিসা রা.। এবং বললেন, জায়দ যদি শহীদ হয় তবে জাফর ইবনে আবি তালিব সেনাপতি হবে। জাফর ইবনে আবি তালিব শহীদ হলে আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা সেনাপতি হবে। আব্দুল্লাহ শহীদ হলে তোমরা উপস্থিত লোকদের মধ্যে উপযুক্ত কাউকে সেনাপতি বানিয়ে নেবে।
আরও পড়ুন
এই যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর ৩ হাজার সৈন্যের বিপরীতে রোমানদের ছিল প্রায় ২ লাখ সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী।
যুদ্ধটি শামের (সিরিয়া) উরদুন অঞ্চলের ‘বালকা’ নামক স্থানের নিকটবর্তী মুতা জনপদে সংঘটিত হয়েছিল।
যুদ্ধে রাসূল সা.-এর নির্ধারণ করে দেওয়া তিন সেনাপতিই শহীদ হন। তখন সবার পরামর্শে খালেদ বিন ওয়ালিদ রা. যুদ্ধের সেনাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর হাতেই বিজয় অর্জিত হয়। তাঁর নয়টি তরবারি ভেঙ্গেছিল এই যুদ্ধে।
এই যুদ্ধে বেশ কয়েকজন সাহাবি শহিদ হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন ছিলেন মুহাজির। বাকিরা ছিলেন আনসার। মুতার যুদ্ধে শহিদ মুহাজির সাহাবিরা হলেন—
১. জাফর ইবনে আবু তালিব রা.।
২. জায়েদ ইবনে হারেসা রা.।
৩. মাসউদ ইবনে আসওদ ইবনে হারিসা ইবনে নাযলা আল আদভী রা.।
৪.ওহাব ইবনে সাদ ইবনে আবু সারহ রা.।
মুতার যুদ্ধে শহিদ আনসার সাহাবি
১. আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা।
২. আব্বাদ ইবনে কায়েস।
৩. হারিস ইবনে নুমান ইবনে আসাফ ইবনে নাফলা নাজ্জারী।
৪. সুরাকা ইবনে আমর ইবনে আতিয়্যা ইবনে খানসা মাযিনী।
৫. আবু কুলায়ব রা.
৬. জাবির ইবনে আমর ইবনে যায়দ ইবনে আউফ রা.।
৭. আমর ইবনে সাদ ইবনে হারিস ইবনে আব্বাদ।
সূত্র : আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৪র্থ খন্ড, ৪৪৮