নারীর সম্মান ও ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে যা বললেন জাতীয় মসজিদের খতিব
নারী ও শিশুদের উপর জুলুম থেকে বিরত থাকতে হবে। নারীকে সম্মান দেওয়া মুত্তাকীর পরিচয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা আবদুল মালেক।
তিনি বলেন, সমাজে অনেক পুরুষ তুচ্ছ কারণে স্ত্রীর উপর অত্যাচার করে। যে নারী দশ মাস তার সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেছে। তাকে বাবা ডাক শুনিয়েছেন, তার প্রতি কীভাবে এমন অবিচার করা যায়! অথচ বিদায় হজের ভাষণে রাসূলুল্লাহ সা. নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করার নির্দেশ দিয়েছেন।
১৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার বয়ানে তিনি এসব বলেন।
জুমার খুতবায় মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেব বলেন, দেশের বিরুদ্ধে যখন শত্রুর ষড়যন্ত্র বেড়ে যায়, তখন বিভিন্ন পরিভাষার ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। এগুলো সঠিক অর্থে ব্যবহার না করলে অনেক ক্ষেত্রে ঈমানের পরিপন্থী হয়ে যাবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘আন্তঃধর্মীয় সম্প্রতি ও ঐক্য’ পরিভাষা।
আরও পড়ুন
এই কথার সঠিক অর্থ হচ্ছে, দেশের সকল নাগরিক ইনসাফের সাথে জুলুমের বিরুদ্ধে শান্তি প্রিয়ভাবে সহাবস্থান করা।
তিনি বলেন, মুসলিম সমাজে অমুসলিমদের ধর্ম পালনে বাধা নেই। তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের জন্য বাধ্যও করা যাবে না। তবে তাদেরকেও এই সমাজের কল্যাণকামী হতে হবে। দেশ-সমাজ বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া যাবে না। কিন্তু এই কথার মানে যদি কেউ এভাবে বুঝে যে সকল ধর্ম সঠিক; তাহলে তার ঈমান থাকবে না।
তিনি বলেন, সমাজে প্রচলিত আরেকটি কথা হচ্ছে, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’। এটি সম্পূর্ণ ভুল ও অন্যায় কথা। ইসলামের নীতি হচ্ছে, ধর্ম যার উৎসব তার।
হাদিসে এসেছে— প্রত্যেক জাতির নিজস্ব উৎসব রয়েছে, আর (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) আমাদের উৎসব। তাই ‘ধর্মীয় সম্প্রতি’র নামে এসব কুফুরি কাজের কোন বৈধতা নেই।
তিনি আরও বলেন, শান্তি চুক্তির মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় না। ‘আমান’ বা শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রধান শর্ত হচ্ছে ‘আমানাত’ ও ‘ঈমান’ থাকা। আমানত ও ঈমান আসবে তাকওয়াপূর্ণ জীবন ধারণের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন
মাওলানা আবদুল মালেক বলেন, তাকওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশ ক্ষেত্র হচ্ছে আখেরাতের উপর বিশ্বাস। একজন মানুষের মধ্যে যদি আল্লাহর ভয় ও পরকালে বিচারের সম্মুখীন হওয়ার ভয় থাকে, তাহলে সে কখনোই জুলুম ও অবিচার করবে না। তাই সত্যিকার অর্থে শান্তি চাইলে রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি থেকে শুরু করে প্রতিটি নাগরিককে তাকওয়ার পথ অবলম্বন করতে হবে।
সমাজে প্রচলিত অকাল মৃত্যু নিয়ে বায়তুল মোকাররমের খতিব বলেন—অনেকে বলে থাকেন অকাল মৃত্যু হয়েছে। ইসলামে অকাল মৃত্যু বলে কিছু নেই। প্রত্যেকে তার নির্ধারিত সময়েই চলে যাবে। আল্লাহ জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন আমাদের পরীক্ষার জন্য। তাই আমাদেরকে সব সময় ঈমান ও ইনসাফের সাথে চলতে হবে এবং সর্বপ্রকার জুলুম থেকে বিরত থাকতে হবে।