অডিওতে সিজদার আয়াত শুনলে করণীয়
কোরআন তিলাওয়াত করা একটি ফজিলতপূর্ণ কাজ। এতে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ে এবং আমলের পাল্লা ভারী হয়। কোরআন তিলাওয়াতে প্রত্যেক হরফে নেকি লাভ হয়। এ বিষয়ে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন—
যে ব্যক্তি কোরআনের একটি হরফ পাঠ করবে সে একটি নেকি লাভ করবে। আর প্রতিটি নেকিকেই ১০ গুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম মিলে একটি হয়ফ; বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, এবং মীম আরেকটি হরফ। (তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)
তিলাওয়াতের পাশাপাশি কোরআনে তিলাওয়াত শোনাও সওয়াবের কাজ। তিলাওয়াত শুনলেও নেকি লাভের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে হাদিসে। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
যে ব্যক্তি কোরআনের একটি আয়াত মনোযোগ দিয়ে শুনবে তার জন্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে সওয়াব লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি তিলাওয়াত করবে, তার জন্য তা কিয়ামতের দিন নূরে পরিণত হবে। (মুসনাদে আহমদ, ২/৩৪১)
আরও পড়ুন
অন্য হাদিসে ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যদি কেউ আল্লাহর কিতাবের একটি আয়াতও শোনে তাহলে তা কিয়ামতের দিন তার জন্য নূরে পরিণত হবে। (সুনানে দারিমী, ২/৫৩৬)
কেউ কোরআন তিলাওয়াত করলে তা মনোযোগ দিয়ে চুপ করে শুনতে হয়। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘এবং যখন কোরআন পাঠ করা হবে, তখন তোমরা মনোযোগ দিয়ে তা শ্রবণ করবে এবং চুপ করে থাকবে, তাহলে হয়তো তোমরা রহমত প্রাপ্ত হবে। (সূরা আরাফ, আয়াত : ২০৪)
কোরআন তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত সামনে এলে তিলাওয়াতকারী এবং শ্রোতা দুজনকেই সিজদা দিতে হয়। তবে সিজদার আয়াত শুনে সিজদা দেওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে, তেলাওয়াত এবং শ্রবণ উভয়টা এক সঙ্গে হতে হবে। অর্থাৎ, সরাসরি তিলাওয়ার শুনতে হবে।
সরাসরি না হয়ে যদি কেউ টেলিভিশন, রেডিও বা অন্য কোনো মাধ্যমে রেকর্ডকৃত তিলাওয়াত শুনে তাহলে তাকে সিজদা দিতে হবে না।
আলেমদের মতে, টেলিভিশন বা রেডিওতে প্রচারিত তেলাওয়াত যদি সরাসরি হয়ে থাকে তাহলে সে তেলাওয়াত শ্রবণ করার কারণে সিজদা দেয়া ওয়াজিব হবে। আর যদি প্রচারিত তেলাওয়াত সরাসরি না হয়ে রেকর্ডকৃত হয় তাহলে সে তেলাওয়াত শ্রবণ করার কারণে সিজদা দেয়া ওয়াজিব হবে না।
তবে অনেক সময় বুঝা যায় না যে, এসব মাধ্যমে প্রচার সরাসরি হচ্ছে নাকি রেকর্ড থেকে। এক্ষেত্রে সতর্কতা হচ্ছে, সেজদা আদায় করা।
(ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৪/২২৩, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া, খন্ড-১১, পৃষ্ঠা-৫৫০)।