কোরআনে পবিত্র ভূমি বলা হয়েছে যে অঞ্চলকে
বনী ইসরাঈলের একাধিক নবীকে আল্লাহ তায়ালা প্রেরণ করেছিলেন সিরিয়া ও ফিলিস্তিন ভূমিতে। এই অঞ্চলকে এক সময় শাম বলা হতো।
পৃথিবীর অন্যতম ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্বাক্ষর সিরিয়া। ইসলাম পূর্ব যুগ থেকেই এই অঞ্চলটি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আল্লাহ তায়ালা বনী ইসরাঈলের অসংখ্য নবীকে প্রেরণ করেছিলেন।
এই অঞ্চলকে শাম বলা হতো পূর্ববর্তী যুগে। হজরত মুসা আ. ষ্বৈরাচার ফেরাউনের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার পর শাম অঞ্চলেই হিজরত করেছিলেন। মূলত শাম বলে সেকালে ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লেবানন, জর্ডান ও আশপাশের অঞ্চলকে বোঝানো হতো।
মুসা (আ.)-এর যুগে বনী ইসরাইলকে ফিলিস্তিনে প্রবেশের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। মুসা (আ.) তাদের বলেছিলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়, পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ করো, যা আল্লাহ তোমাদের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন এবং তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন কোরো না। অন্যথায় তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সুরা মায়িদা: ২১) অবশ্য বনি ইসরাইলরা তখন এ আদেশ অমান্য করে এবং মুসা (আ.)-কে বলে, ‘আপনি ও আপনার রব যুদ্ধ করুন; আমরা এখানে বসে থাকব।’
আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম ও লুত (আ.)-কে আল্লাহ তায়ালা ফিলিস্তিনে হিজরতের কথা বলেছিলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি তাকে ও লুতকে উদ্ধার করে সে দেশে পৌঁছিয়ে দিলাম, যেখানে আমি বিশ্বের জন্য অফুরন্ত কল্যাণ রেখেছি।’ (সুরা আম্বিয়া: ৭১)
আরও পড়ুন
পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা একটি অঞ্চলকে পবিত্র ও বরকতময় আখ্যা দিয়েছেন। সরাসরি শাম শব্দ পবিত্র কোরআনে আসেনি, তবে একাধিক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা যে ভূমিকে বরকতময় ও পবিত্র বলেছেন, তাতে ফিলিস্তিনসহ পুরো অঞ্চলটি অন্তর্ভুক্ত বলে জানিয়েছেন তাফসিরকারগণ।
সূরা বনী ইসরাঈলের প্রথম আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বরকতময় ভূমি বলে এই অঞ্চলের দিকে ঈঙ্গিত করেছেন। বর্ণিত হয়েছে— পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে নিয়ে গিয়েছেন আল মাসজিদুল হারাম থেকে আল মাসজিদুল আকসা* পর্যন্ত, যার আশপাশে আমি বরকত দিয়েছি, যেন আমি তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখাতে পারি। তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
অন্য আয়াতে হজরত সোলায়মান (আ.)-এর ঘটনায়ও ফিলিস্তিনকে বরকতময় ভূমি বলা হয়েছে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আমি প্রবল বায়ুকে সোলায়মানের অধীনে করে দিয়েছিলাম; তা তার আদেশে প্রবাহিত হতো ওই দেশের দিকে, যেখানে আমি বরকত দান করেছি।’ (সুরা আম্বিয়া: ৮১)