দেনমোহর নির্ধারণ না করেই স্বামী মারা গেলে করণীয়
বিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা বিয়েহীন, তাদের বিয়ে সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎ কর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে; যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেন।’ (সূরা নুর, আয়াত : ৩২-৩৩)
বিয়ের মাধ্যমে দ্বীনের অর্ধেক পূর্ণ হয় বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন বান্দা বিয়ে করে, তখন সে তার দ্বীনের অর্ধেক পূরণ করে। অতএব, বাকি অর্ধেকাংশে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে।’ -(সহিহ আল-জামিউস সাগির ওয়া জিয়াদাতুহু, হাদিস : ৬১৪৮; তাবরানি, হাদিস : ৯৭২; মুসতাদরাক হাকিম, হাদিস : ২৭২৮)
বিয়ের পর স্বাভাবিক নিয়মে স্ত্রীর ভরণপোষণ, ভালো-মন্দ দেখা-শোনার দায়িত্ব চলে আসে স্বামীর কাঁধে। পরস্পরের ওপর বিভিন্ন অধিকার চলে আসে। স্বামীর জন্য স্ত্র্রীর মোহরানা আদায় করা ওয়াজিব হয়ে পড়ে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের আগে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সচ্চরিত্রা নারীদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, যদি তোমরা তাদের মোহর প্রদান কর বিয়ের জন্য, প্রকাশ্য ব্যভিচার বা গোপন প্রণয়িনী গ্রহণকারী হিসেবে নয়। -(সুরা মায়েদা. আয়াত : ৫)
আরও পড়ুন
অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা তাদেরকে বিয়ে করলে তোমাদের কোন অপরাধ হবে না যদি তোমরা তাদেরকে তাদের মোহর দাও।’ (সুরা মুমতাহিনা, আয়াত : ১০)
বিয়ের সময়েই স্বামীর জন্য স্ত্রীর দেনমোহর নির্ধারণ করা উচিত। তবে কোনো কারণে যদি বিয়ের সময় দেনমোহর নির্ধারণ করা না হয় এবং স্বামী দেনমোহর নির্ধারণ না করেই মারা যান তাহলে সেই ব্যক্তির সম্পত্তি থেকে দাফন-কাফনের পর যে সম্পদ বাকি থাকবে সেখান থেকে ঋণ আদায় করতে হবে। আর স্ত্রীর মহরও ঋণের অন্তর্ভুক্ত। তাই তাও আদায় করতে হবে।
আর যেহেতু বিয়ের সময় স্ত্রীর দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়নি তাই এখন তার স্বামীর সম্পত্তি থেকে মোহরে মিসল আদায় করতে হবে। মোহরে মিছিল হলো, স্ত্রীর পিতার দিকের বিবাহিতা মহিলা আত্মীয় অর্থাৎ বোন, ফুফু ও চাচাতো বোনদের মধ্যে যারা দ্বীনদারী, বয়স, সৌন্দর্য, গুণাবলি, বংশ মর্যাদা ও জ্ঞান-গরিমা ইত্যাদিতে তার মতো, তাদের মোহরের অনুপাতে একই রকম মোহর নির্ধারণ করা।
(বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৫৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩০৪, আল কাউসার)