জান্নাতে গিয়েও মানুষ যে কারণে আফসোস করবে
জান্নাত একজন মুমিনের একান্ত কামনা বাসনার বস্তু। আল্লাহ তায়ালা তার বিশ্বাসী ও অনুগত বান্দাদের চিরস্থায়ী জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত রয়েছে এর বিনিময়ে।’ (সূরা তওবা, আয়াত : ১১১)
জান্নাতবাসীদের যেসব নেয়ামত দেওয়া হবে তা নিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তুমি তাদেরকে সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে নদীসমূহ। যখনই তাদেরকে জান্নাত থেকে কোন ফল খেতে দেয়া হবে, তারা বলবে, ‘এটাই তো পূর্বে আমাদেরকে খেতে দেয়া হয়েছিল’। আর তাদেরকে তা দেয়া হবে সাদৃশ্যপূর্ণ করে এবং তাদের জন্য তাতে থাকবে পবিত্র স্ত্রীগণ এবং তারা সেখানে হবে স্থায়ী। (সূরা বাকারা, আয়াত : ২৫)
জান্নাতের অফুরন্ত নেয়ামত পেয়ে মানুষ পৃথিবীর সব দুঃখ কষ্ট ভুলে যাবে। তবে পৃথিবীতে যেই সময়টুকু আল্লাহর স্মরণ ছাড়া অনর্থক কাটিয়েছে তার জন্য আফসোস করবে জান্নাতে গিয়েও। এ সম্পর্কে হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
‘জান্নাতিদের জান্নাতে যাওয়ার পর দুনিয়ার কোনো জিনিসের জন্য আফসোস থাকবে না। শুধু ওই সময়ের জন্য আফসোস হবে, যা আল্লাহর স্মরণ ব্যতীত অনর্থক কথা বা কাজে অতিবাহিত হয়েছে।’ (বায়হাকি, হাদিস : ৫০৯)
আরও পড়ুন
পক্ষান্তরে অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত হয়ে নীরব থাকার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। এ সম্পর্কে হজরত ইমরান ইবনে হুসাঈন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তির (অনর্থক কথাবার্তা হতে) নীরব থাকায় যে মর্যাদা লাভ হয় তা ৬০ বছরের নফল ইবাদত হতেও উত্তম।’ (বায়হাকি, হাদিস : ৪৬০২)
মানুষকে আনন্দ দেওয়ার উদ্দেশ্যেও অনর্থক কথা বলার অনুমতি নেই। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে—
আর মানুষের মধ্য থেকে কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা খরিদ করে, আর তারা সেগুলোকে হাসিঠাট্টা হিসেবে গ্রহণ করে; তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি। (সূরা লুকমান: ৬)
আর যদি সে কথাগুলো হয় মানুষকে কষ্ট দিতে, তা তো আরো বিপজ্জনক। কবি ইয়াকুব হামদুনি বলেছেন, ‘তরবারির ক্ষতের আরোগ্য আছে, কিন্তু জিবের দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতের আরোগ্য নেই। ’ (তাজুল উরুস, পৃষ্ঠা ৩৭৩)