যাচাই-বাছাই ছাড়াই কিছু বলে বেড়ানোর স্বভাব যে কারণে নিন্দনীয়
আমরা সারাদিন কতকিছু শুনি, দেখি, অন্যের কাছ থেকে জানি। জেনে অন্যকে জানাই । শোনা, দেখা, অন্যকে জানানোর এই প্রক্রিয়ায় একজন মানুষকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অন্যকে জানানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কোনো কিছু শুনেই অন্যকে জানানো এবং নিশ্চিতভাবে অন্যকে বলা কোনো মুমিনের কাজ নয়। অন্যকে বলা ও জানানোর ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করা উচিত নয়। এতে মিথ্যা কথা বা সঠিক নয় এমন তথ্য ছড়ানোর সম্ভবনা রয়েছে।
কোনো কিছু না জেনে ছড়িয়ে দেওয়াকে হাদিসে মিথ্যাবাদীর কাজ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। হজরত হাফস ইবনু আসিম রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—
কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তাই বলে বেড়ায়। (মুসলিম শরিফ)
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা সত্যকে অবলম্বন কর। কারণ সত্যবাদিতা ভালো কাজে উপনীত করে। আর ভালো কাজ উপনীত করে জান্নাতে। যে মানুষ সত্য বলে ও সত্যবাদিতার অন্বেষায় থাকে, একপর্যায়ে সে আল্লাহর কাছে সত্যবাদী হিসেবে লিখিত হয়ে যায়। আর তোমরা মিথ্যা থেকে দূরে থাক। কারণ মিথ্যা উপনীত করে পাপাচারে। আর পাপাচার উপনীত করে জাহান্নামে। যে ব্যক্তি মিথ্যা বলে ও মিথ্যার অন্বেষায় থাকে, এভাবে একসময় আল্লাহর কাছে সে চরম মিথ্যুক হিসেবে লিখিত হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৬০৭)।
অর্থাৎ সত্যবাদিতা যেমন একটি ভালো গুণ, তার বৈশিষ্ট্য হলো, মানব-জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও এটি ভালো প্রভাব সৃষ্টি করে, ভালোর দিকে পরিচালিত করে। ফলে লোকটির ঠিকানা হয় জান্নাত। পক্ষান্তরে মিথ্যা খোদ একটি মন্দ ও ঘৃণিত স্বভাব। সাথে তার একটি মন্দ প্রতিক্রিয়া এ-ও যে, এটি মানুষের মধ্যে পাপাচার ও অবাধ্যতার প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করে। পুরো জীবনটাকে অন্যায় ও অনাচারে কলুষিত করে তোলে। ফলে তার পরিণতি হয় জাহান্নাম। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৯/১৪০)।
আরেকটি হাদিসে এসেছে : মুমিনের চরিত্রে সবকিছুর অবকাশ থাকতে পারে, কিন্তু প্রতারণা ও মিথ্যা নয়। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২২১৭০)।