বাজারের সিন্ডিকেট নিয়ে যা বললেন বায়তুল মোকাররমের খতিব
বাজারের সিন্ডিকেট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে জুমার বয়ানে আলোচনা করেছেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা আবদুল মালেক। নিজের দ্বিতীয় জুমায় (শুক্রবার, ১ নভেম্বর) খুতবার আগে এসব নিয়ে আলোচন করেন তিনি। তিনটি বিষয়কেই তিনি হারাম এবং অন্যায় বলে অভিহিত করেছেন।
বয়ানের শুরুতে তাকওয়ার গুরুত্ব নিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহর নেয়ামতকে স্মরণ করে, তার সামনে উপস্থিতির ভয় মনে ধারণ করা ও আল্লাহর বিধি-নিষেধ থেকে বিরত থাকাকে তাকওয়া বলে।
তাকওয়ার দুইটি ধরণ নিয়ে আলোচনা করেন মাওলানা আবদুল মালেক। তিনি বলেন, তাকওয়ার প্রথম প্রকার হলো জুলুম থেকে বেঁচে থাকা। জুলুমের অন্যতম প্রকাশক্ষেত্র হলো, দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেওয়া। বর্তমানে অন্যায়ভাবে সিন্ডিকেট করে যেভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে পুরো দেশের মানুষকে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে পূর্বে কখনোই এমন ছিল না।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য বাড়ানো এবং এভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার ব্যাপারে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে। মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি কোন বাজারে অন্যায়ভাবে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়, আল্লাহ কেয়ামতের দিন তাকে আগুনের বড় জায়গায় বসিয়ে শাস্তি দিবেন।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আজকে যারা সিন্ডিকেট করছে তাদের অপরাধ চোর ডাকাত বা অর্থ আত্মসাৎকারীদের মতই ভয়ংকর এবং তাদের এই অতিরিক্ত উপার্জন স্পষ্ট হারাম।
তাকওয়ার দ্বিতীয় ধরনের আলোচনা করতে গিয়ে তিনি সূরা নিসার প্রথম আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, আল্লাহ তায়ালা আদম এবং হাওয়া থেকে পুরুষ এবং নারী সৃষ্টি করেছেন। তাই পুরুষের জন্য পুরুষের মতো করে আল্লাহর প্রদত্ত সকল বিধান পালন করা ফরজ। নারীর জন্যও নারীর মতো করে আল্লাহ প্রদত্ত সকল বিধান পালন করা ফরজ।
তিনি বলেন, কোনো পুরুষ নারীতে রূপান্তর হওয়া অথবা নিজেকে নারী মনে করা এবং কোন নারী নিজেকে পুরুষে রূপান্তরিত করা অথবা নিজেকে পুরুষ ভাবা হারাম এবং কবিরা গুনাহ। এটা আল্লাহর সাথে যুদ্ধ করার সমতুল্য। এল জি বি টি বা সমকামিতা একটি রুচিবিরুদ্ধ ঘৃণ্য অপরাধ। এই অপরাধকে কোন মুসলমান সমর্থন দিতে পারে না।
তিনি আরও বলেন,বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলার কথা গণমাধ্যমে এসেছে, যতটুকু জানি বাংলাদেশ সরকার এখনো এই সিদ্ধান্ত নেননি। আমরা আশা করব সরকার এই সিদ্ধান্ত নিবেন না এবং এই মুসলিম দেশে তারা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না।
ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যে জাতিসংঘ ইজরায়েলের জুলুম থেকে ফিলিস্তিনের শিশুদের রক্ষা করতে পারিনি, যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেনি এমনকি ঔষধ ও খাবার পর্যন্ত অনুরোধ করেও ঢুকাতে পারেনি তারা কিভাবে মানবাধিকারের কথা বলে।
মাওলানা আবদুল মালেক আরও বলেন, মানবাধিকার শিখতে হবে আল্লাহর কোরআন এবং রাসূলের সুন্নাহ থেকে। আমরা রাসূলের আদর্শ নিজেরা বাস্তবায়ন করব এবং এর দাওয়াত সর্বত্র ছড়িয়ে দিব ইনশাআল্লাহ।