মুখে খাবার রেখে কোরআন তিলাওয়াত করা যাবে?
কোরআন তিলাওয়াত ফজিলতপূর্ণ কাজ। বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াতকারীদের আল্লাহর পরিজন বলা হয়েছে হাদিসে। আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিছু মানুষ আল্লাহর পরিজন। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূল, তারা কারা? তিনি বলেন, কোরআন তেলাওয়াতকারীরা আল্লাহর পরিজন এবং তাঁর বিশেষ বান্দা।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস, ২১৫)
কোরআন তিলাওয়াতের সময় তা মনোযোগ সহকারে শোনার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যখন কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন কান লাগিয়ে শোনো এবং চুপ থেকো।’ (সূরা আরাফ, আয়াত : ২০৪)
কোরআন তিলাওয়াতের সময় সবধরনের পার্থিব ব্যস্ততামুক্ত হতে বসতে হয়। এ সময় নিজের ভেতর গাম্ভীর্যতা নিয়ে আসা জরুরি এবং মনে মনে এই কথা খেয়াল রাখতে হবে যে, আমি আল্লাহর বাণী পাঠ করছি, তিনি তা শুনছেন।
কোরআন তিলাওয়াতের সময় মুখে খাবার বা কোনো কিছু না রাখা উত্তম। কারণ, এতে তিলাওয়াতের আদব রক্ষা ব্যাহত হয়। তবে কেউ যদি কখনো মুখে কিছু রেখে তিলাওয়াত করে এবং এ কারণে তিলাওয়াতে কোন সমস্যা না হয়, তাহলে খাবার মুখে রেখে কোরআন তিলাওয়াত করা যাবে। তবে আলেমরা এমনটি করতে নিষেধ করেন। কারণ, কোরআন মহান রবের কালাম। এর প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করা জরুরি। (ফাতাওয়া কাসিমিয়া-৩/৫৬৩, ইমদাদুল মুফতীন-১৭২, ঈযাহুল মাসায়েল-১৩৬)
আরও পড়ুন
কোরআন তিলাওয়াতের সময় তিলাওয়াতের আদবগুলোর প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এখানে তিলাওয়াতের কয়েকটি আদব তুলে ধরা হলো—
১. পবিত্র হয়ে পরিচ্ছন্ন স্থানে কিবলামুখী হয়ে বসা।
২. নিজেকে আল্লাহর সামনে তুচ্ছ জ্ঞান করা।
৩. আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়ে তিলাওয়াত শুরু করা।
৪. ধীরে ধীরে অনুভব করে তিলাওয়াত করা।
৫. রহমতের আয়াতে রহমত প্রার্থনা করা।
৬. শাস্তির আয়াতের বেলায় পানাহ চাওয়া।
৭. জনসমাগমের জায়গায় তিলাওয়াত না করা।
৮. তিলাওয়াতকালে দুনিয়াবি কাজে মশগুল না হওয়া।
৯. অন্য কোনো কাজ করতে হলে কোরআন বন্ধ করা।
১০. কোরআনের অক্ষর-শব্দ-বাক্য শুদ্ধ ও সুন্দরভাবে সুর করে আদায় করা।