মুহাম্মদ সা.-এর জন্মের খুশিতে দাদা আব্দুল মুত্তালিব যা করেছিলেন
মক্কায় সংঘটিত আমুল ফীল বা হাতি বাহিনীর ঘটনার বছর জন্মগ্রহণ করেন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আমুল ফীল বলা হয় আবরাহা বাহিনীর কাবা ধ্বংসের ব্যর্থ অভিযানের বছরকে। এই বছরের সোমবারে জন্মগ্রহণ করেন রাসূল সা.।
তাঁর জন্ম সোমবারে হলেও জন্মের তারিখ নিয়ে ঐতিহাসিকদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে কেউ কেউ রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে তাঁর জন্মের তারিখ বলে নির্ধারণ করেছেন। এই দিনটিই বিশ্ববাসীর মাঝে নবীজি সা.-এর জন্মদিন বলে ব্যাপক সমাদৃত।
রাসূল সা.-এর জন্ম সম্পর্কে বিখ্যাত সাহাবি হাসসান ইবনে সাবিত রা. বলেন, আল্লাহর কসম! আমি তখন সাত-আট বছরের বালক। বয়স কম হলেও আমি তখন বেশ শক্তিশালী ও লম্বা হয়ে উঠেছি। যা শুনতাম তা বুঝার ক্ষমতা আমার হয়েছে। হঠাৎ শুনতে পেলাম, জনৈক ইহুদি ইয়াসরিবের এক দুর্গের ওপর আরোহন করে উচ্চস্বরে ইহুদিদের ডাক দিলো। তারা সমবেত হওয়ার পর সে বললো, আজ রাতে আহমদের জন্ম নক্ষত্রটা উদত হয়েছে।
ইবনে ইসহাক বলেন, রাসূল সা. যখন মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হলেন, তখন তাঁর মা আমিনা তাঁর দাদা আব্দুল মুত্তালিবের কাছে খবর পাঠালেন যে, আপনার একজন নাতি জন্মগ্রহণ করেছে। তাকে দেখে যান।
আরও পড়ুন
আব্দুল মুত্তালিব এসে নিজের নাতিকে দেখলেন। এই সময় মা আমিনা তাঁর গর্ভকালীন সময়ে দেখা স্বপ্ন, নবজাতক সম্পর্কে তাকে যা বলা হয়েছে এবং যে নাম রাখতে বলা হয়েছে তা জানালেন।
সব শুনে আব্দুল মুত্তালিব নাতিকে কোলে তুলে নিলেন এবং তাঁকে নিয়ে কাবা শরীফে প্রবেশ করলেন। এ সময় উপস্থিত সবার মাঝে তিনি নাতির জন্মের খুশি প্রকাশ করলেন এবং এতিম নাতিকে আল্লাহর হেফাজতে ন্যস্ত করার ঘোষণা দিয়ে বললেন—
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার যিনি আমাকে এই পবিত্র শিশুটি দান করেছেন। এই শিশু দোলনায় অবস্থানকারী সকল শিশুর সরদার। তাকে এই পবিত্র ঘরের আশ্রয়ে ন্যস্ত করছি। সকল হিংসুক ও শত্রুর আক্রোশ থেকে তার নিরাপত্তা কামনা করছি। (সীরাতুন নবী সা. ১ম-খণ্ড, পৃষ্ঠা, ১৫৭)