সূরা নাবার বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
সূরা নাবা পবিত্র কোরআনের ত্রিশতম পারার প্রথম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৪০। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। এই সূরায় জান্নাত-জান্নাম, কিয়ামত দিবস, জান্নাতে বসবাসকারীদের নেয়ামতরাজি ও জাহান্নামে বসবাসীদের শান্তি কেমন হবে- এসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সূরা নাবা
عَمَّ يَتَسَاءَلُونَ ١ عَنِ النَّبَاِ الۡعَظِیۡمِ ۙ ٢ الَّذِیۡ ہُمۡ فِیۡہِ مُخۡتَلِفُوۡنَ ؕ ٣ کَلَّا سَیَعۡلَمُوۡنَ ۙ ٤ ثُمَّ کَلَّا سَیَعۡلَمُوۡنَ ٥ اَلَمۡ نَجۡعَلِ الۡاَرۡضَ مِہٰدًا ۙ ٦ وَّالۡجِبَالَ اَوۡتَادًا ۪ۙ ٧ وَّخَلَقۡنٰکُمۡ اَزۡوَاجًا ۙ ٨ وَّجَعَلۡنَا نَوۡمَکُمۡ سُبَاتًا ۙ ٩ وَّجَعَلۡنَا الَّیۡلَ لِبَاسًا ۙ ١۰ وَّجَعَلۡنَا النَّہَارَ مَعَاشًا ۪ ١١ وَّبَنَیۡنَا فَوۡقَکُمۡ سَبۡعًا شِدَادًا ۙ ١٢ وَّجَعَلۡنَا سِرَاجًا وَّہَّاجًا ۪ۙ ١٣ وَّاَنۡزَلۡنَا مِنَ الۡمُعۡصِرٰتِ مَآءً ثَجَّاجًا ۙ ١٤ لِّنُخۡرِجَ بِہٖ حَبًّا وَّنَبَاتًا ۙ ١٥ وَّجَنّٰتٍ اَلۡفَافًا ؕ ١٦ اِنَّ یَوۡمَ الۡفَصۡلِ کَانَ مِیۡقَاتًا ۙ ١٧ یَّوۡمَ یُنۡفَخُ فِی الصُّوۡرِ فَتَاۡتُوۡنَ اَفۡوَاجًا ۙ ١٨ وَّفُتِحَتِ السَّمَآءُ فَکَانَتۡ اَبۡوَابًا ۙ ١٩ وَّسُیِّرَتِ الۡجِبَالُ فَکَانَتۡ سَرَابًا ؕ ٢۰ اِنَّ جَہَنَّمَ کَانَتۡ مِرۡصَادًا ۪ۙ ٢١ لِّلطَّاغِیۡنَ مَاٰبًا ۙ ٢٢ لّٰبِثِیۡنَ فِیۡہَاۤ اَحۡقَابًا ۚ ٢٣ لَا یَذُوۡقُوۡنَ فِیۡہَا بَرۡدًا وَّلَا شَرَابًا ۙ ٢٤ اِلَّا حَمِیۡمًا وَّغَسَّاقًا ۙ ٢٥ جَزَآءً وِّفَاقًا ؕ ٢٦ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا لَا یَرۡجُوۡنَ حِسَابًا ۙ ٢٧ وَّکَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا کِذَّابًا ؕ ٢٨ وَکُلَّ شَیۡءٍ اَحۡصَیۡنٰہُ کِتٰبًا ۙ ٢٩ فَذُوۡقُوۡا فَلَنۡ نَّزِیۡدَکُمۡ اِلَّا عَذَابًا ٪ ٣۰ اِنَّ لِلۡمُتَّقِیۡنَ مَفَازًا ۙ ٣١ حَدَآئِقَ وَاَعۡنَابًا ۙ ٣٢ وَّکَوَاعِبَ اَتۡرَابًا ۙ ٣٣ وَّکَاۡسًا دِہَاقًا ؕ ٣٤ لَا یَسۡمَعُوۡنَ فِیۡہَا لَغۡوًا وَّلَا کِذّٰبًا ۚ ٣٥ جَزَآءً مِّنۡ رَّبِّکَ عَطَآءً حِسَابًا ۙ ٣٦ رَّبِّ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَمَا بَیۡنَہُمَا الرَّحۡمٰنِ لَا یَمۡلِکُوۡنَ مِنۡہُ خِطَابًا ۚ ٣٧ یَوۡمَ یَقُوۡمُ الرُّوۡحُ وَالۡمَلٰٓئِکَۃُ صَفًّا ؕ٭ۙ لَّا یَتَکَلَّمُوۡنَ اِلَّا مَنۡ اَذِنَ لَہُ الرَّحۡمٰنُ وَقَالَ صَوَابًا ٣٨ ذٰلِکَ الۡیَوۡمُ الۡحَقُّ ۚ فَمَنۡ شَآءَ اتَّخَذَ اِلٰی رَبِّہٖ مَاٰبًا ٣٩ اِنَّاۤ اَنۡذَرۡنٰکُمۡ عَذَابًا قَرِیۡبًا ۬ۚۖ یَّوۡمَ یَنۡظُرُ الۡمَرۡءُ مَا قَدَّمَتۡ یَدٰہُ وَیَقُوۡلُ الۡکٰفِرُ یٰلَیۡتَنِیۡ کُنۡتُ تُرٰبًا ٪ ٤۰
সূরা নাবার বাংলা উচ্চারণ
১. আম্মা ইয়াতাছাআলুন।
২. আ-নিন্নাবাইল ‘আজীম।
৩.আল্লাযী হুম ফীহি মুখতালিফূন।
৪. কাল্লা-ছা-ইয়া‘লামূন।
৫.ছু ম্মা কাল্লা-ছা-ইয়া‘লামূন।
৬.আলাম নাজ‘আলিল আরদা মিহা-দা।
৭. ওয়াল জিবা-লা আওতা-দা।
৮.ওয়া খালাকনা-কুম আঝওয়া-জা।
৯.ওয়া জা‘আলনা-নাওমাকুম ছুবা-তা।
১০. ওয়া জা‘আল-নাল্লাইলা লিবা-ছা।
১১.ওয়া জা‘আলনান্নাহা-রা মা‘আ-শা।
১২.ওয়া বানাইনা-ফাওকাকুম ছাব‘আন শিদা-দা।
১৩. ওয়া জা‘আলনা-ছিরা-জাওঁ ওয়াহহা-জা।
১৪. ওয়া আন-ঝালনা-মিনাল মু‘সিরা-তি মাআন ছাজ্জা-জা।
১৫. লি-নুখরিজা বিহী হাব্বাওঁ ওয়া নাবা-তা।
১৬.ওয়া জান্না-তিন আলফা-ফা।
১৭. ইন্না ইয়াওমাল ফাসলি কা-না মীকাতা।
১৮.ইয়াওমা ইউন-ফাখু-ফিসসুরি ফাতা’তূনা আফওয়া-জা।
১৯.ওয়া ফুতি-হাতিছ ছামাউ ফাকা-নাত আবওয়া-বা।
২০.ওয়া ছুই-য়িরাতিল জিরা-লু-ফাকা-নাত ছারা-বা।
২১.ইন্না জাহান্নামা কা-নাত মিরসা-দা।
২২.লিত্তা-গীনা মাআ-বা।
২৩. লা-বিছীনা ফীহা-আহকা-বা।
২৪.লা-ইয়া-যূকূনা ফীহা-বারদাওঁ ওয়ালা-শারা-বা।
২৫. ইল্লা-হামীমাওঁ ওয়া-গাছছা-কা।
২৬.জাঝা-আওঁবিফা-কা।
২৭. ইন্না-হুম কানূ-লা-ইয়ারজুনা হিছা-বা।
২৮. ওয়া কায-যাবূবিআ-য়া-তিনা-কিযযা-বা।
২৯.ওয়া কুল্লা শাইয়িন আহ-সাইনা-হু কিতা-বা।
৩০.ফাযূকূ-ফালান নাঝীদাকুম ইল্লা-‘আযা-বা।
৩১. ইন্না লিল-মুত্তাকীনা মাফা-ঝা।
৩২. হাদা-ইকা ওয়া আ‘না-বা।
৩৩. ওয়া কাওয়া-‘ইবা আতরা-বা।
৩৪. ওয়া-কা’ছান দিহা-কা।
৩৫.লা-ইয়া-ছমা‘উনা ফীহা-লাগওয়াওঁ ওয়ালা-কিযযা-বা।
৩৬.জাঝা-আম-মির রাব্বিকা ‘আতাআন হিছা-বা।
৩৭. রাব্বিছ ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি ওয়ামা-বাইনা-হুমার-রাহমা-নি, লা-ইয়াম-লিকূনা মিনহু খিতা-বা।
৩৮. ইয়াওমা ইয়াকূমুর রূহু-ওয়াল মালাইকাতু-সাফফাল লা-ইয়া-তাকাল্লামূনা ইল্লা-মান আযিনা লাহুর রাহমা-নু-ওয়া কা-লা সাওয়া-বা।
৩৯.যা-লিকাল ইয়াওমুল হাক্কু ফামান শাআত্তাখাযা ইলা-রাব্বিহী মাআ-বা।
৪০. ইন্না-আনযারনা-কুম ‘আযা-বান কারীবাইঁ ইয়াওমা ইয়ানযু-রুল মারউ মা-কাদ্দামাত ইয়াদা-হু ওয়া ইয়াকূলুল কা-ফিরু ইয়া-লাইতানী কুনতুতুরা-বা।
আরও পড়ুন
সূরা নাবার বাংলা অর্থ
তারা (অর্থাৎ কাফেররা) কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে?সেই মহা ঘটনা সম্পর্কে। যে সম্বন্ধে তারা বিভিন্ন রকম কথা বলে। সাবধান! তারা শীঘ্রই জানতে পারবে। আবারও সাবধান! তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।
আমি কি ভূমিকে শয্যা বানাইনি? এবং পাহাড়সমূহকে (ভূমিতে প্রোথিত) কীলক? আর তোমাদেরকে (নর ও নারীর) যুগল রূপে সৃষ্টি করেছি। আর তোমাদের ঘুমকে ক্লান্তি ঘুচানোর উপায় বানিয়েছি। এবং রাতকে বানিয়েছি আবরণস্বরূপ। এবং দিনকে জীবিকা আহরণের সময় নির্ধারণ করেছি। এবং আমিই তোমাদের উপর সাতটি সুদৃঢ় অস্তিত্ব (আকাশ) নির্মাণ করেছি।
এবং আমিই এক প্রজ্বলিত প্রদীপ (সূর্য) সৃষ্টি করেছি। আমি ভরা মেঘ থেকে মুষলধারায় বারি বর্ষণ করেছি,তা দ্বারা শস্য ও অন্যান্য উদ্ভিদ উৎপন্ন করার জন্য। এবং নিবিড় ঘন বাগানও। নিশ্চয়ই বিচার দিবস হবে এক নির্ধারিত সময়ে।
যে দিন শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে অনন্তর তোমরা দলে দলে সমাগত হবে। এবং আকাশ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ফলে বহু দরজা হয়ে যাবে। এবং পাহাড়সমূহকে সঞ্চালিত করা হবে, ফলে তা মরীচিকা সদৃশ হয়ে যাবে।
নিশ্চয়ই জাহান্নাম ওঁৎ পেতে রয়েছে। তা ঔদ্ধত্যের ঠিকানা। যাতে তারা যুগ-যুগ ধরে এভাবে অবস্থান করবে। যে, তাতে তারা আস্বাদন করবে না কোন শীতলতা এবং না কোন পানীয় বস্তু। ফুটন্ত পানি ও রক্ত-পূঁজ ছাড়া। এটা হবে তাদের পরিপূর্ণ প্রতিফল। তারা (নিজেদের কর্মের) হিসাবকে বিশ্বাস করত না। এবং তারা আমার আয়াতসমূহ চরমভাবে প্রত্যাখ্যান করত।
আমি প্রতিটি জিনিস লিপিবদ্ধভাবে সংরক্ষণ করেছি। সুতরাং তোমরা মজা ভোগ কর! আমি তোমাদের কেবল শাস্তিই বৃদ্ধি করব। যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে নিশ্চয়ই তাদের জন্য আছে সাফল্য। উদ্যানরাজি ও আঙ্গুর। সমবয়স্কা নব যৌবনা তরুণী। ছলকানো পান-পাত্র,সেখানে তারা কোন অহেতুক কথা শুনবে না এবং কোন মিথ্যা কথাও না। তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে পুরস্কারস্বরূপ, (আল্লাহর) এমন দান, যা মানুষের কর্ম হিসাবে দেওয়া হবে।
সেই প্রতিপালকের পক্ষ থেকে, যিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও এর মধ্যবর্তী সবকিছুর মালিক, দয়াময়! তার সামনে কিছু বলার সাধ্য তাদের হবে না। যে দিন রূহ ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে, সে দিন দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন, সে ছাড়া কেউ কথা বলতে পারবে না এবং সে বলবে সঠিক কথা। সে দিন সত্য দিন। সুতরাং যার ইচ্ছা, সে তার প্রতিপালকের কাছে আশ্রয়স্থল বানিয়ে রাখুক। বস্তুত আমি এক আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করে দিলাম। সে দিন প্রত্যেক ব্যক্তি তার স্বহস্তে সামনে পাঠানো কর্মসমূহ প্রত্যক্ষ করবে আর কাফের ব্যক্তি বলবে, হায়! আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম। (সূরা নাবা, আয়াত : ১-৪০)