সূরা নাযিয়াতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
সূরা নাযিয়াত পবিত্র কোরআনের ৭৯ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৪৬। সূরাটি পবিত্র কোরআনের ৩০ তম পারায় অবস্থিত ও মক্কায় অবতীর্ণ।
এ সূরায় কিয়ামত ও মৃত্যুর পরের জীবনের প্রমাণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ফিরাউনের করুণ পরিণতি ও আল্লাহর রাসূলকে মিথ্যা বলার পরিণাম সম্পর্কে সাবধানবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে।
সূরা নাযিয়াত
وَالنّٰزِعٰتِ غَرۡقًا ۙ ١ وَّالنّٰشِطٰتِ نَشۡطًا ۙ ٢ وَّالسّٰبِحٰتِ سَبۡحًا ۙ ٣ فَالسّٰبِقٰتِ سَبۡقًا ۙ ٤ فَالۡمُدَبِّرٰتِ اَمۡرًا ۘ ٥ یَوۡمَ تَرۡجُفُ الرَّاجِفَۃُ ۙ ٦ تَتۡبَعُہَا الرَّادِفَۃُ ؕ ٧ قُلُوۡبٌ یَّوۡمَئِذٍ وَّاجِفَۃٌ ۙ ٨ اَبۡصَارُہَا خَاشِعَۃٌ ۘ ٩ یَقُوۡلُوۡنَ ءَاِنَّا لَمَرۡدُوۡدُوۡنَ فِی الۡحَافِرَۃِ ؕ ١۰ ءَاِذَا کُنَّا عِظَامًا نَّخِرَۃً ؕ ١١ قَالُوۡا تِلۡکَ اِذًا کَرَّۃٌ خَاسِرَۃٌ ۘ ١٢ فَاِنَّمَا ہِیَ زَجۡرَۃٌ وَّاحِدَۃٌ ۙ ١٣ فَاِذَا ہُمۡ بِالسَّاہِرَۃِ ؕ ١٤ ہَلۡ اَتٰىکَ حَدِیۡثُ مُوۡسٰی ۘ ١٥ اِذۡ نَادٰىہُ رَبُّہٗ بِالۡوَادِ الۡمُقَدَّسِ طُوًی ۚ ١٦ اِذۡہَبۡ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ اِنَّہٗ طَغٰی ۫ۖ ١٧ فَقُلۡ ہَلۡ لَّکَ اِلٰۤی اَنۡ تَزَکّٰی ۙ ١٨ وَاَہۡدِیَکَ اِلٰی رَبِّکَ فَتَخۡشٰی ۚ ١٩ فَاَرٰىہُ الۡاٰیَۃَ الۡکُبۡرٰی ۫ۖ ٢۰ فَکَذَّبَ وَعَصٰی ۫ۖ ٢١ ثُمَّ اَدۡبَرَ یَسۡعٰی ۫ۖ ٢٢ فَحَشَرَ فَنَادٰی ۫ۖ ٢٣ فَقَالَ اَنَا رَبُّکُمُ الۡاَعۡلٰی ۫ۖ ٢٤ فَاَخَذَہُ اللّٰہُ نَکَالَ الۡاٰخِرَۃِ وَالۡاُوۡلٰی ؕ ٢٥ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَعِبۡرَۃً لِّمَنۡ یَّخۡشٰی ؕ٪ ٢٦ ءَاَنۡتُمۡ اَشَدُّ خَلۡقًا اَمِ السَّمَآءُ ؕ بَنٰہَا ٝ ٢٧ رَفَعَ سَمۡکَہَا فَسَوّٰىہَا ۙ ٢٨ وَاَغۡطَشَ لَیۡلَہَا وَاَخۡرَجَ ضُحٰہَا ۪ ٢٩ وَالۡاَرۡضَ بَعۡدَ ذٰلِکَ دَحٰىہَا ؕ ٣۰ اَخۡرَجَ مِنۡہَا مَآءَہَا وَمَرۡعٰہَا ۪ ٣١ وَالۡجِبَالَ اَرۡسٰہَا ۙ ٣٢ مَتَاعًا لَّکُمۡ وَلِاَنۡعَامِکُمۡ ؕ ٣٣ فَاِذَا جَآءَتِ الطَّآمَّۃُ الۡکُبۡرٰی ۫ۖ ٣٤ یَوۡمَ یَتَذَکَّرُ الۡاِنۡسَانُ مَا سَعٰی ۙ ٣٥ وَبُرِّزَتِ الۡجَحِیۡمُ لِمَنۡ یَّرٰی ٣٦ فَاَمَّا مَنۡ طَغٰی ۙ ٣٧ وَاٰثَرَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا ۙ ٣٨ فَاِنَّ الۡجَحِیۡمَ ہِیَ الۡمَاۡوٰی ؕ ٣٩ وَاَمَّا مَنۡ خَافَ مَقَامَ رَبِّہٖ وَنَہَی النَّفۡسَ عَنِ الۡہَوٰی ۙ ٤۰ فَاِنَّ الۡجَنَّۃَ ہِیَ الۡمَاۡوٰی ؕ ٤١ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ السَّاعَۃِ اَیَّانَ مُرۡسٰہَا ؕ ٤٢ فِیۡمَ اَنۡتَ مِنۡ ذِکۡرٰىہَا ؕ ٤٣ اِلٰی رَبِّکَ مُنۡتَہٰىہَا ؕ ٤٤ اِنَّمَاۤ اَنۡتَ مُنۡذِرُ مَنۡ یَّخۡشٰہَا ؕ ٤٥ کَاَنَّہُمۡ یَوۡمَ یَرَوۡنَہَا لَمۡ یَلۡبَثُوۡۤا اِلَّا عَشِیَّۃً اَوۡ ضُحٰہَا ٪
সূরা নাযিয়াত বাংলা উচ্চারণ
১. ওয়ান্না-ঝি‘আ-তি গারকা।
২. ওয়ান্না-শিতা-তি নাশতা।
৩.ওয়াছ-ছা-বিহা-তি ছাবহা।
৪. ফাছ-ছা-বিকা-তি ছাবকা।
৫.ফাল মুদাব্বিরা-তি আমরা।
৬.ইয়াওমা তারজুফু-ররা-জিফাহ।
৭.তাত-বা‘উহার রা-দিফাহ।
৮.কূলূবুইঁ ইয়াওমাইযিওঁ ওয়া-জিফাহ।
৯.আবসা-রুহা-খা-শি‘আহ।
১০.ইয়া-কূ-লূনা আ ইন্না-লামার-দূদূনা ফিল হা-ফিরাহ।
১১. আ-ইযা-কুন্না-ইজা-মান নাখিরাহ।
১২.কা-লূ-তিলকা ইযান কাররাতুন খা-ছিরাহ।
১৩.ফা-ইন্নামা-হিয়া ঝাজরাতুওঁ ওয়া-হিদাহ ।
১৪.ফা-ইযা-হুম বিছছা-হিরাহ।
১৫.হাল আতা-কা হাদীছু-মূছা।
১৬.ইযনা-দা-হু রাব্বুহূ-বিলওয়া-দিল মুকাদ্দাছি তুওয়া।
১৭.ইয-হাব ইলা-ফিরআওনা ইন্নাহূ-তাগা।
১৮.ফা-কুল হাল্লাকা ইলা-আন তাঝাক্কা।
১৯. ওয়া-আহ-দিয়াকা ইলা-রাব্বিকা ফাতাখশা।
২০.ফাআরা-হুল আ-য়াতাল কুবরা।
২১.ফাকাযযাবা ওয়া-আসা।
২২. ছুম্মা আদবারা ইয়াছআ।
২৩.ফা-হাশারা ফানা-দা।
২৪.ফাকা-লা আনা রাব্বুকুমুল আলা।
২৫.ফা-আখাযাহুল্লাহু নাকা-লাল আ-খিরাতি ওয়াল ঊলা।
২৬.ইন্না ফী যা-লিকা লা-ইবরাতাল লিমাইঁ ইয়াখশা।
২৭.আ-আনতুম আশাদ্দু-খালকান আমিছ-ছামাউ বানা-হা।
২৮. রাফাআ ছামকাহা-ফাছা-ওয়া-হা।
২৯.ওয়া-আগতাশা লাইলাহা-ওয়া আখরাজা দুহা-হা।
৩০.ওয়াল আরদা-বা‘দা যা-লিকা দাহা-হা।
৩১. আখরাজা মিনহা-মা-আহা-ওয়া মার‘আ-হা।
৩২. ওয়াল জিবা-লা আরছা-হা।
৩৩. মাতা-আল্লাকুম ওয়ালি আনআ-মিকুম।
৩৪. ফা-ইযা-জা-আত্তিত্তাম্মাতুল কুবরা।
৩৫. ইয়াওমা ইয়াতাযাক্কারুল ইনছা-নুমা-ছাআ।
৩৬.ওয়া বুররিঝাতিল জাহীমুলিমাইঁ ইয়ারা।
৩৭.ফাআম্মা-মান তাগা।
৩৮. ওয়া আ-ছারাল হায়া-তাদ্দুনইয়া।
৩৯.ফা-ইন্নাল জাহীমা হিয়াল মা’ওয়া।
৪০. ওয়া আম্মা-মান খা-ফা মাকা-মা রাব্বিহী ওয়া না-হান্নাফছা ‘আনিল হাওয়া।
৪১. ফা-ইন্নাল জান্নাতা হিয়াল মা’ওয়া।
৪২. ইয়াছ-আলূনাকা আনিছ ছা-আতি আইইয়া-না মুরছা-হা।
৪৩. ফীমা আনতা মিন যিকরা-হা।
৪৪. ইলা-রাব্বিকা মুনতাহা-হা।
৪৫.ইন্নামা-আনতা মুনযিরু মাইঁ ইয়াখশা-হা।
৪৬. কা-আন্নাহুম ইয়াওমা ইয়ারাওনাহা-লাম ইয়াল-বাছূইল্লা-আশিইইয়াতান আও দুহা- হা।
আরও পড়ুন
সূরা নাযিয়াত বাংলা অর্থ
শপথ তাদের (অর্থাৎ সেই ফেরেশতাদের), যারা (কাফেরদের প্রাণ) কঠোরভাবে টেনে বের করে। এবং যারা (মুমিনদের প্রাণের) বন্ধন খোলে কোমলভাবে। তারপর (শূন্যে) তীব্রগতিতে সাতার কেটে যায়। তারপর দ্রুতগতিতে এগিয়ে যায়। তারপর যে আদেশ পায় তার (বাস্তবায়নের) ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যে দিন প্রকম্পিতকারী (শিঙ্গাধ্বনি সবকিছু) কাঁপিয়ে দেবে। তার পেছনে আসবে পরবর্তীটি।
সে দিন বহু হৃদয় হবে প্রকম্পিত। তাদের চোখ থাকবে অবনত। তারা (কাফেরগণ) বলে, আমাদেরকে কি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে? আমরা যখন গলিত অস্থিতে পরিণত হব তখনও কি? তারা বলে, তাহলে তো সেটা বড় ক্ষতির প্রত্যাবর্তন। বস্তুত তা একটি মাত্র বিকট আওয়াজই হবে। অমনি তারা খোলা মাঠে আবির্ভূত হবে।
(হে রাসূল!) তোমার কাছে কি মূসার বৃত্তান্ত পৌঁছেছে? যখন তার প্রতিপালক তাকে পবিত্র ‘তুওয়া’ উপত্যকায় ডাক দিয়ে বলেছিলেন, ফিরাউনের কাছে যাও, সে বড় ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছে। তাকে বল, তোমার কি এ আগ্রহ আছে যে, তুমি শুধরে যাবে? এবং আমি তোমাকে দেখাব তোমার প্রতিপালকের পথ, যাতে তুমি তাকে ভয় কর? অতঃপর মূসা তাকে দেখাল মহা নিদর্শন। তবুও সে (তাকে) অস্বীকার করল ও অমান্য করল। তারপর প্রতিবিধানের চেষ্টা করতে ফিরে গেল।
তারপর সকলকে সমবেত করল এবং উচ্চৈঃস্বরে ঘোষণা করল, বলল, আমি তোমাদের শ্রেষ্ঠ প্রতিপালক। বলল, আমি তোমাদের শ্রেষ্ঠ প্রতিপালক। পরিণামে আল্লাহ তাকে পাকড়াও করলেন আখেরাত ও দুনিয়ার শাস্তিতে। বস্তুত যে আল্লাহর ভয় করে তার জন্য এ ঘটনার মধ্যে অবশ্যই শিক্ষা আছে।
(হে মানুষ!) তোমাদেরকে সৃষ্টি করা বেশি কঠিন, না আকাশকে। আল্লাহ তা নির্মাণ করেছেন। তিনি তার উচ্চতা উত্তোলন করেছেন, তারপর তা সুবিন্যস্ত করেছেন। তিনি তার রাতকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছেন এবং তার দিনের আলো প্রকাশ করেছেন। এবং তারপর পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন। তা থেকে তার পানি ও তৃণ বের করেছেন। এবং পর্বতসমূহকে প্রোথিত করেছেন। তোমাদের নিজেদের ও তোমাদের পশুদের ভোগের জন্য।
অতঃপর যখন মহা বিপর্যয় সংঘটিত হবে। যে দিন মানুষ তার যাবতীয় কৃতকর্ম স্মরণ করবে। এবং প্রত্যেক দর্শকের সামনে জাহান্নামকে প্রকাশ করা হবে। তখন যে ব্যক্তি অবাধ্যতা করেছিল, এবং পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিয়েছিল, জাহান্নামই হবে তার ঠিকানা।
আর যে ব্যক্তি নিজ প্রতিপালকের সামনে দাঁড়ানোর ভয় পোষণ করত এবং নিজেকে মন্দ চাহিদা হতে বিরত রাখত, জান্নাতই হবে তার ঠিকানা।
তারা তোমাকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে যে, তা কখন সংঘটিত হবে? এ বিষয়ে আলোচনা করার সাথে তোমার কী সম্পর্ক? এর চূড়ান্ত জ্ঞান তো তোমার প্রতিপালকেরই। যে ব্যক্তি তার ভয় রাখে তুমি কেবল তার সতর্ককারী। যে দিন তারা তা দেখতে পাবে সে দিন তাদের মনে হবে, যেন তারা (দুনিয়ায় বা কবরে) এক সন্ধ্যা বা এক সকালের বেশি অবস্থান করেনি। (সূরা নাযিয়াত, আয়াত : ১-৪৬)