শিক্ষার্থীদের সমর্থনে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ও মাওলানা আজহারী
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এতে নিন্দার ঝড় বইছে সামাজিক মাধ্যমে। হামলাকারীদের শাস্তিসহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
সোমবার-মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এর জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পুরো দেশের শিক্ষাঙ্গন। আহত ও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী। নিহত হয়েছেন ৬জন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে যখন সারাদেশ উত্তাল, তখন তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন দেশের জনপ্রিয় আলেম, ইসলামি আলোচক শায়েখ আহমাদুল্লাহ ও মালয়েশিয়া প্রবাসী আলেম মিজানুর রহমান আজহারী।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আহবান জানাই। ইতোমধ্যে অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে। এরপরও আলোচনায় না বসলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে বৈ কমবে না। আমরা আর কোনো আর্তনাদ শুনতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, এমনিতেই মেধাবী তরুণদের দেশ ছেড়ে বিদেশে স্থায়ী হওয়ার সারি প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে। মেধার মূল্যায়ন না হলে এ সংকট আরো ঘনীভূত হবে।
এদিকে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, কোটা নয়, গোটা দেশটাই সংস্কারের প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, পক্ষে কিংবা বিপক্ষে, আন্দোলন একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। প্রাণ হনন তো গণতান্ত্রিক অধিকার না। আর এটা সমাধানও না। শিক্ষার্থীদের এমন রক্তাক্ত দৃশ্য সহ্য করার মতন নয়। কোটা সংস্কারের ইস্যুতে তাদের সাথে আলাপ করে যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছা যেত। কিন্তু তা না করে তাদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানো স্পষ্ট সীমালঙ্ঘন। আর আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।
প্রসঙ্গত, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন মঙ্গলবার বেশ সহিংস রূপ নেয়। বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ছয়জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন কয়েকশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় সারা দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একইসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের সব কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে।
গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা প্রসঙ্গে কথা বলার সময় মন্তব্য করেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’ প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।