অসুস্থতার সময় ধৈর্য ধরলে যে সওয়াব
সুস্থতাই মানুষের জীবনের সুখের মূল। সুস্থ না থাকলে মানুষের পক্ষে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব নয়। সুস্থতার মাঝে কখনো কখনো মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। কোনো মুসলিম ব্যক্তি অসুস্থ হলে বা তার কোনো রোগ হলে যে কষ্ট হয় এর বিনিময়ে আল্লাহ গুনাহ মাফ করেন।
মুমিন ব্যক্তির যে কোন রোগ হলে এর বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন। হাদিসে কী পরিমাণ গুনাহ মাফ করা হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তাই আশা করা যায় আল্লাহ এর মাধ্যমে সব ধরনের সগীরা গুনাহ মাফ করবেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصِيبُه أَذًى مِنْ مَرَضٍ فَمَا سِوَاهُ إِلَّا حَطَّ اللهُ بِه سَيِّئَاتِه كَمَا تَحُطُّ الشَّجَرَةُ وَرَقَهَا
কোনো মুসলিম যখনই কোনো রোগ অথবা অন্য কিছুর মাধ্যমে কষ্ট পায়, কাঁটা বিধে বা তার চেয়েও কঠিন কষ্ট হয়, আল্লাহ তায়ালা এর কারণে তার গুনাহসমূহকে মোচন করে দেন এবং তার গুনাহসমূহকে এভাবে ঝরিয়ে দেয়া হয় যেভাবে গাছ তার পাতা ঝরিয়ে দেয়। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪৮, মুসলিম, হাদিস : ৬৭২৪)
আরেক হাদিসে জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবীজি সা.-কে বলতে শুনেছি,
مَا مِنْ مُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ وَلَا مُسْلِمٍ وَلَا مَسْلَمَةٍ يَمْرَضُ مَرَضًا إِلَّا قَصَّ اللهُ بِه عَنْهُ مِنْ خَطَايَاهُ
কোন মু’মিন পুরুষ অথবা নারী, কোন মুসলিম পুরুষ অথবা নারী রোগাক্রান্ত হলে এর বিনিময়ে আল্লাহ তার গুনাহরাশি মোচন করে দেন। (আল আদাবুল মুফরাদ : ৫০৮)
আরও পড়ুন
অন্য হাদিসে জাবির রা. বলেন, উম্মে সায়িব বা উম্মে মুসাইয়িব-এর জ্বর হলে রাসূলুল্লাহ সা. তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে উম্মে সায়িব বা উম্মে মুসাইয়িব! তোমার কী হয়েছে যে, থরথর করে কাঁপছো? সে বললো, জ্বর হয়েছে, আল্লাহ তাতে বরকত না দিন। (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ সা. বললেন :
لَا تَسُبِّى الْحُمّٰى فَإِنَّهَا تُذْهِبُ خَطَايَا بَنِى آدَمَ كَمَا يُذْهِبُ الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ
জ্বরকে গালি দিও না। জ্বর তো আদম সন্তানের পাপ মোচন করে যেমন হাপর লোহার ময়লা দূর করে। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৩৫।)
আরেক হাদিসে আবদুর রহমান ইবন সাঈদ তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন,
আমি একদিন সালমান রা.-এর সাথে ছিলাম। তিনি তখন কিন্দায় এক রোগী দেখতে (অর্থাৎ তার কুশল জিজ্ঞেস করতে) গিয়েছিলেন। যখন তিনি তার শয্যাপাশে উপস্থিত হলেন তখন বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেননা, আল্লাহ তায়ালা মুমিন বান্দার রোগকে তার গুনাহসমূহের কাফফারাহ এবং কৈফিয়ত স্বরূপ গ্রহণ করেন। আর পাপী ব্যক্তির রোগ হল ওই উটের মতো যাকে তার মালিক পা মিলিয়ে বাঁধল। আবার ছেড়ে দিল অথচ সে জানল না যে কেন তাকে বাঁধা হল আর কেনই বা তাকে ছেড়ে দেয়া হল। (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৪৯৩)