রমজানে দান করলে বেশি সওয়াব মেলে
দান-সদকার গুরুত্ব ইসলামে অনেক বেশি। ইসলাম সবসময় দান-বদান্যতায় উৎসাহ ও তাগিদ দিয়েছে। কোরআন-হাদিসে দান, সদকা ও সহযোগিতার অনেক বর্ণনা এসেছে। তবে রমজান মাসে দান-সদকার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
রমজানে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর দান-সদকা নিয়ে বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। এক হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন,
জাকাত সম্ভব না হলে সদকা
যাদের ওপর জাকাত ফরজ নয়, তারা এই মাসে বেশি বেশি সদকা করতে পারেন। যাদের ওপর জাকাত ফরজ, তারাও জাকাত আদায়ের পর অতিরিক্ত সদকা করতে পারেন। সদকার মাধ্যমে মহান আল্লাহ রিজিকে বরকত এনে দেন। বিপদাপদ দূর করে দেন। মানুষের হায়াতে বরকত হয়, অপমৃত্যু কমে ও অহংকার-অহমিকা থেকে মুক্ত থাকা যায়। (আত্তারগিব ওয়াত তারহিব : ২/৬৫)
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার ঈদুল আজহা অথবা ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের জন্য আল্লাহর রাসুল (সা.) ঈদগাহের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি মহিলাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, হে মহিলা সমাজ! তোমরা সদকা করতে থাকো। কারণ আমি দেখেছি, জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমরাই বেশি। তারা জিজ্ঞেস করলেন, কী কারণে, হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বলেন, তোমরা বেশি পরিমাণে অভিশাপ দিয়ে থাকো আর স্বামীর অকৃতজ্ঞ হও। (বুখারি, হাদিস : ৩০৪)
সদকার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন
শুধু বিপদাপদ নয়, সদকার মাধ্যমে গুনাহ থেকে পবিত্র হওয়া যায়। অন্তরের নিফাক দূর হয়ে যায়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! তাদের ধন-সম্পদ থেকে সদকা নিয়ে তাদেরকে পাক পবিত্র করুন, (নেকির পথে) তাদের এগিয়ে দিন এবং তাদের জন্য রহমতের দোয়া করুন। (সুরা তাওবা, আয়াত : ১০৩)।
যারা গোপনে দান করবেন মহান আল্লাহ কঠিন কিয়ামতের দিন তাদের আরশের ছায়াতলে স্থান দেবেন। (বুখারি, হাদিস : ৬৬০)
তাছাড়া রিজিকে বরকত এনে দেয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব অধ্যয়ন করে, সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে যা কখনো ধ্বংস হবে না। যাতে আল্লাহ তাদের কাজের প্রতিফল পরিপূর্ণ দেন এবং তিনি নিজ অনুগ্রহে তাদের আরো বেশি দেন। নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল, অসীম গুণগ্রাহী।’ (সুরা ফাতির, আয়াত : ২৯-৩০)
তাই আসুন, পবিত্র রমজানে আমরা বেশি বেশি সদকা করি। আর মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।