২০২৪ সালের ঈদুল আজহা কবে?
মুসলমানদের জীবনে আল্লাহ প্রদত্ত দুটি আনন্দের দিনের অন্যতম একটি ঈদুল আজহা। ঈদুল ফিতরের দুই মাস দশ দিন পর মুসলমানেরা ঈদুল আজহা পালন করে থাকেন। দিনের হিসাবে যা সবোর্চ্চ ৭০ দিন হতে পারে।
ঈদের উৎসব এবং আনন্দ-উদযাপনের ব্যাপারে এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন, তখন তিনি দেখলেন সেখানে আগে থেকে বসবাস করা মানুষেরা বছরে দুটি বিশেষ উৎসব পালন করছে (গান-বাজনা, ঢোল-তবলা বাজিয়ে)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উৎসব পালনের এই রীতি অপছন্দ করলেন এবং তাদের জিজ্ঞেস করলেন, এই দুই দিনে তোমরা কীসের উৎসব পালন করো?
উত্তরে তারা বললো- আমরা এই দুটি দিনে খেলাধুলা, আনন্দ ফুর্তি করতাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে এই দুইটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন, এর একটি হল ঈদুল ফিতর, অপরটি হলো, ঈদুল আজহা।’(আবু দাউদ, হাদিস, ১১৩৪)
ঈদুল আজহা (আরবীতে:عيد الأضحى) মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দু’টো ধর্মীয় উৎসবের একটি। বাংলাদেশে এই উৎসবটি কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত। ঈদুল আজাহা মূলত আরবী বাক্যাংশ।
এর অর্থ হলো ‘ত্যাগের উৎসব’। আসলে এটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ত্যাগ করা। এ দিনটিতে মুসলমানেরা তাদের সাধ্যমত ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী উট, গরু, দুম্বা কিংবা ছাগল আল্লাহর নামে কোরবানি করে বা জবাই দেয়।
আরও পড়ুন
ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী, মহান আল্লাহ তায়ালা মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কোরবানি করার নির্দেশ দেন।
এই আদেশ অনুযায়ী হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম তার সবচেয়ে প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে কোরবানি করার জন্য উদ্যত হলে আল্লাহ তায়ালা তাকে তা করতে বাধা দেন এবং পুত্রের পরিবর্তে পশু কোরবানীর নির্দেশ দেন।
এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর এই দিবসটি পালন করে। হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত ৩ দিন ধরে ঈদুল আজহা চলে। হিজরি চান্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান থাকে।
এবার (২০২৪ সালে) ১০ই জিলহজ বা কোরবানির ঈদ হতে পারে জুন মাসের ১৬ বা ১৭ তারিখ। সৌদি আরবের চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী জুন মাসের ১৬ তারিখে দেশটিতে কোরবানির ঈদ পালিত হবে।
বাংলাদেশে সাধারণত সৌদি আরব, কাতার, ওমান, আরব আমিরাত এই সকল দেশের পরের দিন কোরবানির ঈদ পালন করা হয়। সেই হিসেবে বাংলাদেশের কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখ। তবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখে পরিবর্তন হতে পারে।