ইতিকাফে গুরুত্ব দেবেন যে কারণে
মুমিনের জন্য রমজানের পুরো সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। এই গুরুত্ব কয়েকগুণ বেড়ে যায় রমজানের শেষ দশকের আগমনে। এই দশকে হাজার রাতের থেকেও ফজিলতপূর্ণ লাইলাতুল কদর অনুসন্ধানের মোক্ষম সুযোগ রয়েছে। একইসঙ্গে তা রমজান শেষের বার্তা নিয়ে আসে। আল্লাহ তায়ালা এই দশকে নাজাতের ঘোষণাও দিয়েছেন।
এই দশকের ফজিলত ও বরকত পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো ইতিকাফ। ইতিকাফের সময় একজন মানুষ দুনিয়ার অন্যসব ব্যস্ততা ছেড়ে নিজেকে আল্লাহর জন্য সপে দেন আল্লাহর ঘর মসজিদে। এখানে পুরোটা সময় তিনি ইবাদত বন্দেগিতে কাটিয়ে দেন।
মসজিদে অবস্থানকালে বান্দার ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। আর যখন তা রমজানে ইতিকাফ অবস্থায় হবে তা আরও বেশি ফজিলতপূর্ণ।
আরও পড়ুন
ইতিকাফ বলা হয়, বিশেষ নিয়তে বিশেষ অবস্থায় আল্লাহ তায়ালার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করাকে। ইতিকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্য সব কিছু থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়।
ইতিকাফের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভি রহ. বলেন, ‘মসজিদে ইতিকাফ হচ্ছে হৃদয়ের প্রশান্তি, আত্মার পবিত্রতা ও চিত্তের নিষ্কলুষতা; চিন্তার পরিচ্ছন্নতা ও বিশুদ্ধতা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)
মদিনায় অবস্থানকালে রাসূলুল্লাহ সা. প্রতিবছরই ইতিকাফ পালন করেছেন। শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও রমজানে তিনি ইতিকাফ ছাড়েননি। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফে কাটান।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)
ইতিকাফ প্রসঙ্গে মহানবী সা. নিজেই বলেছেন, আমি কদরের রাতের সন্ধানে প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করলাম। এরপর ইতিকাফ করলাম মধ্যবর্তী ১০ দিন। অতঃপর ওহি প্রেরণ করে আমাকে জানানো হলো যে তা শেষ ১০ দিনে। সুতরাং তোমাদের যে ইতিকাফ পছন্দ করবে, সে যেন ইতিকাফ করে।’ এরপর মানুষ তার সঙ্গে ইতিকাফে শরিক হয়। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৯৪)
অপর এক হাদিসে হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমজান মাসের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে তোমরা লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। (বুখারি, হাদিস : ২০১৭)