যাদের জাকাত দেওয়া যাবে না
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়টি হচ্ছে জাকাত। ঈমানের পর নামাজ ও তার পরই জাকাতের স্থান। পবিত্র কোরআনের ৩২ জায়গায় জাকাতের কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে ২৮ জায়গায় নামাজ ও জাকাতের কথা একত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাকাত আরবি শব্দ। জাকাতের অর্থ পবিত্রতা, ক্রমবৃদ্ধি ও আধিক্য ইত্যাদি। পারিভাষিকভাবে ধনীদের অর্থ-সম্পদে আল্লাহর নির্ধারিত অংশকে জাকাত বোঝায়। জাকাত সম্পদকে পবিত্র করে। বিত্তশালীদের পরিশুদ্ধ করে। দারিদ্র্য মোচন করে ও উৎপাদন বৃদ্ধি করে। অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস করে সমাজে শান্তি আনয়ন করে।
জাকাত সবাইকে দেওয়া যায় না। সবাই জাকাত গ্রহণের উপযুক্তও নয়। আল্লাহ তাআলা জাকাত ব্যয়ের খাতগুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। আবার অনেকে কিছু জায়গায় জাকাতের অর্থ ব্যয়কে শুদ্ধ মনে করে থাকেন। অথচ সেখানে জাকাত দেওয়ার আদৌ কোনো নিয়ম নেই।
যাদের জাকাত দেওয়া যায় না
পাঠকদের জানার সুবিধার্থে আমরা সেসব ক্ষেত্র উল্লেখ করবো, যেখানে বা যাদের জাকাত দেওয়া যায় না। যাতে করে তারা সঠিক নিয়মে এবং সঠিক খাতে জাকাত আদায় করতে পারেন।
এক. কাফির।
দুই. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক।
তিন. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের নাবালক সন্তান।
চার. বনু হাশেমের লোক; রাসুল (সা.)-এর পূর্বপুরুষ হাশেমের বংশধর যারা।
পাঁচ. মা, বাবা, দাদা, দাদি, নানা, নানি— একইভাবে যত ওপরের স্তরের দিকের কাউকে জাকাত দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ যাদের মাধ্যমে দুনিয়ায় এসেছে, তাদেরসহ ওপরের স্তরের কাউকে জাকাত দেওয়া যাবে না।
ছয়. নিজের মাধ্যমে যারা দুনিয়ায় এসেছে, অর্থাৎ ছেলে-মেয়ে ও তাদের সন্তানাদি একইভাবে তাদের সন্তানদের জাকাত দেওয়া যাবে না।
সাত. স্ত্রী ও স্বামী একে অন্যকে জাকাত দিতে পারবে না।
আট. মসজিদ-মাদরাসা, পুল, রাস্তা, হাসপাতাল বানানোর কাজে ও মৃতের দাফনের কাজে জাকাতের টাকা দেওয়া যাবে না।
তথ্যসূত্র : ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৮৮, ১৮৯; তাতারখানিয়া : ৩/২০৬; আদদুররুল মুখতার :৩/২৯৪, ২৯৫