ব্যাংকে টাকা থাকলে কি জাকাত দিতে হবে?
জাকাত ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। জাকাত বলতে ধন-সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দান করাকে বোঝায়। পারিভাষিক অর্থে জাকাত হলো, নিসাবধারীর ধন-মাল, জমির ফসল ও খনিজ সম্পদের ওপর ইসলামি শরিয়ত নির্ধারিত অংশ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করা।
আল্লাহ তাআলা জাকাত ব্যয়ের খাতগুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। সেগুলো আমরা আগের একটি লেখায় উল্লেখ করেছি। এখানে কিছু বিশেষ অর্থ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর জাকাতের বিধান
সরকারি কর্মচারীদের বেতন থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য বাধ্যতামূলক যে পরিমাণ টাকা কেটে করে রাখা হয়, সে পরিমাণ অর্থ উত্তোলনের আগে কর্মচারীর মালিকানায় আসে না। তাই সরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডে অর্থ থাকাকালীন তার ওপর জাকাত দিতে হবে না। এ কারণে ওই ফান্ডের টাকা পাওয়ার পর বিগত বছরের জাকাতও দিতে হবে না। তবে যদি কর্মচারী ওই প্রভিডেন্ট ফান্ডের সঞ্চিত অর্থ অন্য কোনো ইনস্যুরেন্স কম্পানিতে স্থানান্তর করিয়ে নেয়, সে ক্ষেত্রে ওই অর্থ স্বতন্ত্রভাবে বা অন্য জাকাতযোগ্য মালের সঙ্গে যোগ হয়ে নিসাব পরিমাণ হলে যথানিয়মে তার ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/২৬০ পৃষ্ঠা, ফাতাওয়া শামি : ২/৩০৬)
ব্যাংকে সঞ্চয়কৃত টাকার জাকাত
কোনো ব্যক্তি সঞ্চয়ের জন্য যদি ব্যাংকে টাকা জমা রাখে, তাহলে ঋণমুক্ত অবস্থায় যেদিন তার জমাকৃত টাকা নিসাব পরিমাণ হবে, সেদিন থেকে এক বছর পূর্ণ হলে— ওই টাকার ওপর জাকাত দিতে হবে। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/২৭০; মাহমুদিয়া : ৩/৫৭)
বীমা কোম্পানিতে জমাকৃত টাকার জাকাত
বীমায় যে পরিমাণের টাকা কাজে লাগানো হয়েছে, তার ওপর জাকাত ওয়াজিব। প্রতিবছর জাকাত আদায় করার সময় নিজ সম্পদের হিসাব করতে হবে। (ফাতাওয়া উসমানি : ২/৩৯)
কোম্পানির শেয়ারের ওপর জাকাত ওয়াজিব
কোম্পানির অংশ ক্রয় করা এই শর্তে জায়েজ আছে যে, যদি এর লেনদেন যদি বৈধ হয়। এ ক্ষেত্রে তার অংশের মূল্যের ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে। (ফাতাওয়া উসমানি : ২/৩৯)