কোরআন তিলাওয়াতের জন্য তাজবিদ গুরুত্বপূর্ণ যে কারণে
পবিত্র কোরআনের প্রতিটি শব্দকে তার নিজস্ব মাখরাজ (উচ্চারণ স্থল) থেকে উচ্চারণ করা এবং প্রতিটি হরফকে তার সিফাত (উচ্চারণের সঠিক) অবস্থা সহ আদায় করাকে তাজবিদ বলা হয়। তাজবিদের উদ্দেশ্য হলো কোরআন শরিফের হরফ বা শব্দগুলোকে শুদ্ধ ও সুন্দর করে পড়া। অর্থাৎ, প্রতিটি হরফকে তার নিজস্ব মাখরাজ থেকে সঠিকভাবে উচ্চারণ করা এবং প্রতিটি হরফকে তার সঠিক উচ্চারণ ভঙ্গিতে আদায় করা। (জামালুল কোরআন)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের প্রায় ১৫০ বছর পরে তাজবিদের প্রচলন ঘটে। তখন 'তাজবিদ' শব্দটির মাধ্যমে বুঝানো হতো তিলাওয়াত সমৃদ্ধ করার পদ্ধতি।
কোরআন তিলাওয়াত বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য তাজবিদ শেখা গুরুত্বপুর্ণ। কারণ, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোরআন পাঠে যে অভিজ্ঞ ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করে, সে সম্মানিত রাসুল ও পুণ্যাত্মা ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকবে। আর যে ব্যক্তি তোতলাতে তোতলাতে সক্লেশে কোরআন তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দ্বিগুণ নেকি লেখা হবে।’ (বুখারি, হাদিস, ৪৯৩৭; মুসলিম, হাদিস, ১৮৯৮)
অপর এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে কোরআনকে সুন্দর স্বরে পড়ে না সে আমার দলভুক্ত নয়।’ (বুখারি, হাদিস, ৭৫২৭)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা কোরআনকে তোমাদের সুর দিয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত কর।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস, ১৩৪২)
হজরত আবু মুসা আল-আশাআরী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সুমিষ্ট স্বরে কোরআন পাঠ করতেন বিধায় রাসূল তার প্রশংসা করে বলেছিলেন, ‘তোমাকে দাউদ পরিবারের সুর দেয়া হয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস, ৫০৪৮, মুসলিম, হাদিস, ৭৯৩)
আরও পড়ুন
আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোরআন পাঠের নিয়ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, শব্দগুলোকে টেনে টেনে পড়তেন। উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ পড়ে বললেন যে, তিনি আল্লাহ, রাহমান এবং রাহীম শব্দকে মদ্দ করে বা টেনে পড়তেন।’ (বুখারি, হাদিস, ৫০৪৬)
এনটি