নফল ওমরাহ-ফিলিস্তিনিদের সহায়তা নিয়ে যা বললেন মুফতি তাকি উসমানি
বর্তমান সময়ে নফল ওমরার পরিবর্তে ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করা উত্তম বলে মতামত দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রসিদ্ধ আলেম ও দেশটির সুপ্রিম কোর্টের শরিয়ত আপিল বিভাগের সাবেক বিচারক মুফতি তাকি উসমানি।
তিনি বলেছেন, বর্তমান সময়ে সবধরনের নফল ইবাদতের থেকে উত্তম হচ্ছে ফিলিস্তিনের গাজাবাসী এবং স্বাধীনতাকামীদের আর্থিকভাবে সাহায্য করা। করাচিতে অনুষ্ঠিত হুরমতে আকসা কনফারেন্সে বক্তব্য দেওয়ার সময় এই মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আমার মতে যারা নফল ওমরার ইচ্ছা করেছেন তারা এই টাকা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা যুদ্ধে দান করুন। এতে বেশি সওয়াব ও প্রতিদান মিলবে। এ সময় তিনি আলেমদের ফজর নামাজে কুনুতে নাজেলা পড়ার আহ্বান জানান।
মুফতি তাকি উসমানি বলেন, আজকের সমাবেশে আলোচনার বিষয় হাসামের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও প্রতিরক্ষামূলক হামলা। এ নিয়ে প্রথমে বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশ ও র্যালী বের করা হয়েছিল, তবে বর্তমানে বিষয়টি কিছুটা নেতিয়ে পড়েছে, তাই আমি আলেমদের একত্রিত করে এই বিষয়টিকে বাঁচিয়ে রাখা উচিত মনে করেছি।
তিনি আরও বলেন, মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশই অমুসলিরা দখল করে রেখেছে, তবে এখানে শুধু দেশ দখলের সমস্যা নয়, বরং এখানে মূল বিষয় হলো বায়তুল মুকাদ্দাস, আমাদের প্রথম কেবলা। মুসলিম বিশ্বের উচিত ফিলিস্তিনে অবস্থিত মসজিদুল আকসাকে ইহুদিদের হাত থেকে রক্ষা করা।
আরও পড়ুন
প্রসঙ্গত, মুফতি তাকি উসমানি মুসলিম বিশ্বের একজন পরিচিত ব্যক্তিত্ব। তিনি হাদিস, ইসলামি ফিকহ, তাসাউফ ও অর্থনীতিতে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে ইসলামি অর্থনীতিতে সক্রিয় ব্যক্তিদের অন্যতম একজন মুফতি তাকি উসমানি। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শরীয়াহ আদালত এবং ১৯৮২ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের শরীয়াহ আপিল বেঞ্চের বিচারক ছিলেন।
তিনি বিখ্যাত তাফসিরগ্রন্থ ‘মাআরিফুল কোরআন-এর রচয়িতা মুফতি শফি উসমানির সন্তান এবং বিখ্যাত দুই ইসলামি ব্যক্তিত্ব মাওলানা রফী উসমানি ও মাওলানা ওয়ালী রাজীর ভাই।
মুফতি তাকি উসমানি ১৯৪৩ সালের ৫ অক্টোবর ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ভারত বিভাগের পর ১৯৪৮ সালের ১ মে তার পরিবার পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হন। মাওলানা তাকি উসমানির বংশধারা ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উসমান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মাঝে হামাসের সাথে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত ডিসেম্বরের শুরু থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজায় হামলা আরও তীব্র করে দখলদার সেনারা।
ইসরায়েলি লাগাতার এই আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬১ হাজার ফিলিস্তিনি।
সূত্র : জিও নিউজ
এনটি