ফজর নামাজ পড়তে না পারলে করণীয়
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। এর মধ্যে এশা ও ফজরের জামাতের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। সাধারণত এ দুই সময় মানুষ বিশ্রামে থাকে। কিংবা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায়। সে কারণে এশা ও ফজরের জামাতে অবহেলা হয়ে থাকে। এ জন্য হাদিসে এই দুই ওয়াক্তের নামাজের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ফজিলত বর্ণনা করে উৎসাহিত করা হয়েছে।
উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘একবার মহানবী (সা.) আমাদের ফজরের নামাজে ইমামতি করেন। এরপর সালাম ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করেন, অমুক কি আছে? লোকেরা বলল, না নেই। তারপর আরেকজনের নাম নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, অমুক কি আছে? লোকেরা বলল, সেও নেই। তখন তিনি বলেন—
এ দুই নামাজ (এশা ও ফজর) মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন। তোমরা যদি জানতে এই দুই নামাজে কী পরিমাণ সওয়াব আছে, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে শরিক হতে।
(আবু দাউদ, হাদিস : ৫৫৪)
অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ল, সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ল।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৬)
ফজর নামাজের সময়
ফজরের নামাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় হলো সুবহে সাদিক থেকে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ফজরের নামাজের সময় হলো, ঊষার উদয় থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬১২)
সুতরাং কোনো কারণে ঘুম থেকে জাগ্রত হতে না পারলে কিংবা ভুলে যাওয়ার কারণে ফজর নামাজ ছুটে গেলে— যখন ঘুম থেকে জাগ্রত হবে তখন কাজা করে দেওয়া ওয়াজিব।
রাসুলুল্লাহ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করতে ভুলে যায় বা সে সময় ঘুমিয়ে থাকায় তা ছুটে যায়, তার কাফফারা হলো যখনই তা মনে হবে, তখনই (সঙ্গে সঙ্গে) নামাজ আদায় করে নেবে।’
(মুসলিম, হাদিস : ৬৮৪)
ধারাবাহিক অসাবধানতা নয়
নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ আদায়ে অবহেলা-উদাসীনতা জায়েজ নেই। কারণ, ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দেওয়া কবিরা গুনাহ। আর প্রতিদিন ভুল করা বা অসাবধানতা গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজির, যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন।’ (সুরা মাউন, আয়াত: ৪-৫)
বিশিষ্ট তাফসিরবিদ ও হাদিসজ্ঞ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এই আয়াতে সেসব নামাজির কথা বলা হয়েছে, যারা নামাজের নির্দিষ্ট সময় থেকে দেরিতে আদায় করে। (তাফসিরে কুরতুবি, খণ্ড : ২০, পৃষ্ঠা : ২১১)