মৃতের গোসলে বরই পাতা ব্যবহার করা হয় কেন?
কোনো মুসলমান মারা গেলে অপর মুসলমানের ওপর মৃতের গোসল, কাফন, জানাজা, জানাজা বহন ও দাফন করার অবশ্যক হয়ে যায়। কেউ মারা গেলে দ্রুতই এই কাজগুলো সম্পাদন করতে হয়। হাদিসে এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত আলী রা.-কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘হে আলী! তিনটি জিনিসের ক্ষেত্রে বিলম্ব করবে না। ১. নামাজের যখন সময় আসবে তখন নামাজ আদায় করা থেকে দেরি করবে না। ২. মৃত ব্যক্তির জানাজা যখন উপস্থিত হবে তখন কাফন-দাফন সম্পন্ন করতে দেরি করবে না। ৩. কোন অবিবাহিতা মেয়ের জন্য যখন কোন উপযুক্ত পাত্র পাবে তখন তাকে পাত্রস্থ করা থেকে বিলম্ব করবে না।’ -(তিরমিজি ১/২০৬)
জানাজার দাফন-কাফন একজন মুসলমানের অধিকার। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘এক মুসলিমের ওপর অন্য মুসলিমের ছয়টি অধিকার রয়েছে—
এক. যখন কোনো মুসলমানের সঙ্গে দেখা হয় তখন সালাম দেবে। দুই. কোনো মুসলমান ডাকলে সাড়া দেবে। তিন. সে তোমার কাছে সত্ পরামর্শ চাইলে তুমি তাকে সত্ পরামর্শ দেবে। চার. কোনো মুসলমানের হাঁচি এলে হাঁচিদাতা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললে জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলবে। পাঁচ. কোনো মুসলমান অসুস্থ হলে তার সেবা-শুশ্রূষা করবে। ছয়. কোনো মুসলমান মৃত্যুবরণ করলে তার জানাজায় শরিক হবে।’ -(মুসলিম, হাদিস, ২১৬২)
মৃতকে গোসল করানোর জন্য যে পানি ব্যবহার করা হয়, এই পানিতে বরইপাতা ব্যবহার করা হয়। এ বিষয়ে উম্মে আতিয়া আনসারী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেয়ে (জয়নাব রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা)-এর ইন্তেকাল হলে তিনি আমাদের কাছে এসে বলেন, তোমরা তাকে তিন, পাঁচ এবং প্রয়োজন মনে করলে তার চেয়ে বেশিবার বরইপাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও। শেষবার কিছু কর্পূর ব্যবহার করবে। তোমরা শেষ করে আমাকে জানাও। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা শেষ করার পর তাকে জানালাম। তখন তিনি তার চাদরখানি আমাদের দিয়ে বলেন, এটি তার গায়ের সঙ্গে জড়িয়ে দাও। (বুখারি, হাদিস, ১১৮০)
বরইপাতার উপকারিতা ও গুণাগুণ বিজ্ঞানের গবেষণায় প্রমাণিত। গরম পানিতে সিদ্ধ বরইপাতার অ্যান্টিসেপটিক উপাদান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বেশ কার্যকর। পোকামাকড়ের আক্রমণ ও পচন রোধ করতে সক্ষম।
এনটি