বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের নিয়ে কোরআনে যা বলা হয়েছে
পৃথিবীতে মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রাথমিক বিষয় বেঁচে থাকার অধিকার ও জীবনের সুরক্ষা। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সংঘাত ও সহিংসতাকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। হিংসা বিদ্বেষ ছেড়ে পরস্পরের মাঝে সৌহার্দ্য ও শাস্তিপূর্ণ সহবস্থান ইসলামের শিক্ষা। ইসলাম কখনো দ্বন্দ্ব, সংঘাত, বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দেয় না। অশান্তি-বিশৃঙ্খলা তথা ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টিকে কোরআনে হত্যার চেয়েও গুরুতর পাপ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ফেতনা (দাঙ্গা, বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য) হত্যা অপেক্ষা গুরুতর পাপ।’ (সুরা বাকারা, আয়াত, ১৯১)।
আরেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায়, আল্লাহ ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত, ৬৪)
এ পাপ আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এ পাপাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রয়োজন ও গুরুত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। কেননা একটি ফেতনা-অশান্তি সমাজে অসংখ্য ফেতনা-অশান্তি ও অরাজকতার জন্ম দিতে পারে। তাই ফেতনা-বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি সৃষ্টির বিরুদ্ধে ইসলামের কঠোর অবস্থান।
ফেতনা-বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি পরিহারকারীদের প্রকৃত মুসলিম বলে আখ্যা দিয়েছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি বলেছেন, ‘প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে’ (বুখারি : ৬৪৮৪; মুসলিম : ৪০)।
তাই পৃথিবীতে সত্যিকারার্থে সত্য ও ন্যায়নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমাজ জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বজায় রাখা ইসলামের দৃষ্টিতে অপরিহার্য কর্তব্য এবং ঈমানি দায়িত্ব। সুতরাং মানব সমাজে কোনো রকম নাশকতা, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, সংঘাত, উগ্রতা, প্রতিহিংসাপরায়ণতা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ইসলামে নিষিদ্ধ।
আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন, ‘দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনের পর এতে বিপর্যয় ঘটাবে না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৫৬)
এনটি