মেসে অন্যের ফেলে যাওয়া জিনিস ব্যবহার করা কি ঠিক?
মেস, আবাসিক হোস্টেল, মাদরাসার আবাসিক ভবনে অনেককেই একসঙ্গে থাকেন। এক্ষেত্রে অনেক সময় একে অপরের জিনিস ব্যবহার করে থাকেন। অনুমতি সাপেক্ষে একজন আরেকজনের জিনিস ব্যবহার করতে পারবেন। তবে কারো অনুমতি ছাড়া অন্যের কোনো জিনিস ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমতি ছাড়া অন্যের জিনিস ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন।
অনুমতি ছাড়া অন্যের জিনিস ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
এক হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘কোনো লোক এমন কাপড়ে হাত মোছবে না, যা তাকে দেওয়া হয়নি।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস, ৪৮২৭)
আরেক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মুসলিমের সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করবে, আল্লাহর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ঘটবে, এমন অবস্থায় যে আল্লাহ তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। এ কথারই সত্যতায় আল্লাহ তায়ালা অবতীর্ণ করেন, নিশ্চয় যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে, এরা আখেরাতের নেয়ামতের কোনো অংশই পাবে না।’ (বুখারি, হাদিস, ৬৬৫৯)
অনমুতি ছাড়া অন্যের জিনিস ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৮)
মেস হোস্টেলে কেউ কিছু ফেলে গেলে...
তবে কোনো মেস বা আবাসিক হোস্টেলে কেউ যদি নিজের ব্যবহৃত কোনো জিনিস ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে আর কখনো তা নিতে না আসেন, তাহলে তা ব্যবহারের বিধান একটু ভিন্ন।
এক্ষেত্রে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, মেসে বসবাসকারী লোকদের রেখে যাওয়া জিনিসগুলো যদি এমন হয়, যা সাধারণত মানুষ নিতে আসে না, সেগুলো গরিবদের দিয়ে দেওয়া উচিত। গরিব মেস মেম্বাররাও চাইলে তা ব্যবহার করতে পারবেন।
আর যদি ফেলে রেখে যাওয়া জিনিসগুলো এমন হয়, এর ব্যাপারে মনে হয় যে, তা হয়তো ভুলে ছেড়ে গেছে, সে আবার কখনো নিতে আসবে, তাহলে এই জিনিসের মালিককে খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। যদি খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে তার আসার সম্ভবনা আছে, এমন সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং যতদিন মালিক আসার সম্ভাবনা থাকবে ততদিন অপেক্ষা করার পরও মালিক না আসলে কোনো গরিব লোককে তা দিয়ে দেওয়া যাবে। আর এক্ষেত্রে মেসের দায়িত্বে থাকা কেউ দরিদ্র হলে তিনি নিজেও তা ব্যবহার করতে পারবেন।
(আল বাহরুর রায়েক : ৫/১৫৩, ফাতাওয়া খানিয়া : ৩/৩৮৯; মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৮৬৩১; আল বাহরুর রায়েক ৫/১৫৩; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ২/২৮৯; আদ্দুরুল মুখতার : ৪/২৭৯)
এনটি