মনে মনে তালাক দেওয়ার কোনো নিয়ম আছে?
দাম্পত্য জীবনে দুইজন মানুষের একসঙ্গে মানিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ইসলামে। এক্ষেত্রে পুরুষদের সহনশীল ও ধৈর্যের পরিচয় দিতে বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা পুরুষদের নির্দেশ দিয়েছেন ‘তাদের সঙ্গে সৎভাবে জীবনযাপন করবে।’ (সূরা নিসা, আয়াত, ১৯)
সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মনোমালিন্য হলে নিজেরাই তা মিটমাট করে নেওয়া উচিত। কিন্তু তা যদি বড় আকার ধারণ করে, তখন দুই পরিবার আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির চেষ্টার কথা বলা হয়েছে কোরআনে।
বর্ণিত হয়েছে, ‘তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশঙ্কা করলে তার (স্বামীর) পরিবার থেকে একজন ও তার (স্ত্রী) পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ে নিষ্পত্তি চাইলে আল্লাহ তাদের মধ্যে মিমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবিশেষ অবহিত।’ -(সূরা আন নিসা, আয়াত, ৩৫)
তবে দাম্পত্য জীবনের তিক্ততা যদি এতোটা বেড়ে যায় যে, কোনোভাবে দুইজনের একসঙ্গে থাকা সম্ভব নয় তাহলে ইসলামে তালাকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে এই ব্যবস্থা রাখা হলেও তালাক প্রদানে কখনোই উৎসাহ দেওয়া হয় না। এটা নিতান্তই নিরুপায় অবস্থা থেকে উত্তরণের একটা অপছন্দনীয় পথ। বিয়ের বন্ধন ছিন্ন করা সমাজেও যেমন কারও কাছে কাম্য নয়, তেমনি ইসলামেও কাম্য নয়। ইসলামে এটাকে বলা হয়েছে ‘সর্বনিকৃষ্ট হালাল’।
আরও পড়ুন
হজরত মুআররিফ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে হালাল বিষয়ের মধ্যে তালাকের চেয়ে অধিকতর ঘৃণিত আর কিছু নেই।’ (আবু দাউদ, হাদিস, ২১৭৭)।
ইসলামে তালাক দেওয়ার নির্দিষ্ট বিধান ও নিয়ম রয়েছে। এসব বিষয়ে কোরআন-হাদিসে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট বা ঈঙ্গিতপূর্ণ শব্দ মুখে উচ্চারণ বা লেখার মাধ্যমে তালাক দিতে হয়। কিন্তু কেউ যদি মুখে উচ্চারণ না করে বা না লিখে শুধু মনে মনে তালাক দেয়, তাহলে তালাক হয় না।
(সহিহ মুসলিম-২৬১, আল-আশবাহ ওয়ান নাযায়ের- ৮৯, আদ-দুররুল মুখতার ১/৫৩৫ (মাকতাবা এইচ এম সাঈদ) বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৫৭, আল মাওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ-২৩/২৯)
এনটি