মজলুমের বদদোয়া থেকে বেঁচে থাকবেন যে কারণে
দুর্বল বা সহায়হীনের প্রতি জুলুম করা একটি বড় ধরনের অপরাধ। অন্যের ওপর অন্যায় বা অবিচার জালিমের পতন ও ধ্বংস ডেকে আনে। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে জুলুম থেকে নিষেধ করেছেন।
এমনকি আল্লাহ নিজের জন্যও জুলুম হারাম করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসে কুদসিতে আল্লাহর কথা বর্ণনা করে বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘হে আমার বান্দা, আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি। অতএব তোমরা একে অপরের ওপর জুলুম কোরো না।’ (মুসলিম, হাদিস, ৬৭৩৭)
যারা জালেম তাদের নিজেদের জুলুম থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। অন্যথায় মজলুমের সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে তার মুখ থেকে যে বদদোয়া বের হয়, তা জালেমের জন্য ধ্বংস ডেকে আনে। কারণ, অত্যাচারিত ব্যক্তির অন্তরের আকুতি মহান আল্লাহর কাছে খুব দ্রুত পৌঁছে যায়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহর কাছ থেকে ফেরত আসে না। এক. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। দুই. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া। তিন. মজলুমের দোয়া। আল্লাহ তায়ালা তাদের দোয়া মেঘমালার ওপরে তুলে নেন এবং তার জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেন। মহান রব বলেন, আমার সম্মানের শপথ, কিছুটা বিলম্ব হলেও আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব।’ (তিরমিজি, হাদিস, ৩৫৯৮)
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মুআজ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে ইয়েমেনে পাঠান এবং তাকে বলেন, মজলুমের ফরিয়াদকে ভয় করবে। কেননা তার ফরিয়াদ এবং আল্লাহর মধ্যে পর্দা থাকে না।(বুখারি, হাদিস, ২৪৪৮)
কেউ কারো ওপর জুলুম করলে পরকালে তার জন্য শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে। তবে দুনিয়াতেও তাকে জুলুমের শাস্তি পেতে হয়।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোনো বিষয়ে জুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেয়, ওই দিন আসার আগে, যে দিন তার কোনো দিনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার জুলুমের পরিমাণ তা তার কাছ থেকে নেওয়া হবে আর তার কোনো সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। (বুখারি, হাদিস, ২৪৪৯)
এনটি